শিক্ষকরা শুধু শিশুদের পড়াশুনাই শেখান না, তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধের বীজ বপন করেন। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনের সময় শিক্ষকরাও শিশুদের জীবন বাঁচান। সম্প্রতি নিউ জার্সির ইস্ট অরেঞ্জ কমিউনিটি চার্টার স্কুলে এমন একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে একজন শিক্ষক নিজের তৎপরতা এবং উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে তার ক্লাসের একটি শিশুর জীবন বাঁচিয়েছেন। জানুন বিষয়টি কি।
একজন শিক্ষকের একটি শিশুর জীবন রক্ষা করার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে। আসলে জলের বোতলের ঢাকনা গলায় আটকে যাওয়ায় এই ছাত্রের দম বন্ধ হয়ে যায়। জল পান করার সময় কখনো কখনো এমন হয় যে বাচ্চাদের গলায় কিছু আটকে যায়, কিন্তু এই সময়ে কেউ বুঝতে পারে না কী করা উচিত। এমনই কিছু ঘটেছিল ক্লাসরুমে এক শিশুর সঙ্গে, যখন সে তার জলের বোতলে মুখ দিয়ে জল খাচ্ছিল। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখা যাক যে বিশেষজ্ঞরা বলেন শ্বাসনালিতে খাবার বা অন্য কোনো বস্তু আটকে গিয়ে শ্বাস রোধ হলে মাত্র ৪ মিনিট সময়ের মধ্যে একজন মানুষের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সেই সময় ক্লাসে উপস্থিত একজন মহিলা শিক্ষিকা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বুদ্ধিমত্তার সাথে তার গলা থেকে বোতলের ক্যাপটি বের করে নেন। ভিডিওতে স্পষ্ট পরিলক্ষিত হয় শিক্ষকের বুদ্ধিমত্তা। গলায় আটকে থাকা বোতলের ক্যাপটি বের করতে দেরি হলে শিশুটির প্রাণও যেতে পারত।
দেখুন ভিডিওটি:
রবার্ট, নিউ জার্সির (New Jersey) ইস্ট অরেঞ্জ কমিউনিটি চার্টার স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র। অঙ্কের ক্লাস চলাকালীন তার জল পিপাসা পায়। জলে চুমুক দেওয়ার জন্য একটি প্লাস্টিকের বোতল বার করে সে। হাত দিয়ে জলের বোতল খুলতে না পেরে রবার্ট তার মুখ ব্যবহার করার চেষ্টা করে। এটি করতে গিয়ে তিনি বোতলটি হাত দিয়ে চেপে ধরেন, যাতে বোতলটির মুখের ক্যাপ আচমকা ছিটকে বেরিয়ে আসে এবং তার গলায় গিয়ে সোজা আটকে যায়। ঢাকনা আটকে গেলে রবার্টের দমবন্ধ হতে থাকে। এক মুহূর্ত নষ্ট না করে সে শিক্ষিকার কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে যায়।
ক্লাসে উপস্থিত জেনিস জেনকিন্স নামের একজন শিক্ষিকা শিশুটির সমস্যা বুঝতে পেরেছিলেন এবং তারপর বোতলের ক্যাপটি গলা থেকে বার করে ফেলতে হাইমলিখ কৌশল (Heimlich maneuver) ব্যবহার করেছিলেন। শিক্ষিকা জানান, ‘তিনি ঘাড়ের দিকে ইশারা করছিলেন এবং ক্লাসের সব শিশু ভয় পেয়ে গেল। সে কথা বলতে পারছিল না তাই আমি তাকে ঘুরিয়ে দিয়ে ব্যবহার করি এবং ঢাকনা বেরিয়ে আসে।’
প্রসঙ্গত পেটে সঠিক উপায়ে চাপ দিয়ে ফুসফুসের হাওয়ার পাল্টা ধাক্কায় শ্বাসনালির মুখ খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া কে বলা হয় হাইমলিখ কৌশল! বিখ্যাত মার্কিন থোরাসিক সার্জেন হেনরি হাইমলিখ-এর নামে এই পদ্ধতির নাম ‘হাইমলিখ কৌশল’। গলায় কোনো কিছু ঢুকে শ্বাসরোধ হলে এটাই সর্বজনীন জীবনদায়ী চিকিৎসা।