দাদা বলে ডাকলেও তাকে কখনও মন থেকে দাদা হিসেবে মেনে নেন নি তরুণী। এমনকি বিয়ে করার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই দাদা তার বোনের মন ভেঙে দিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে করে নিয়েছিলেন তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানা এলাকার বাসিন্দা। আর বিয়ে করেই হল বিপদ। ওই মহিলা দাদা ডাকলেও সেই ভালোবাসার মানুষ অন্য মহিলার সাথে দেখতে পারেন নি। তাই নতুন বউদিকে বিষ দিয়ে খুন করল ‘ননদ’ বউভাতের দিন। ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মর্মান্তিক এই ঘটনায়।
রিয়া দাস পূর্ব মেদিনীপুরে তমলুক থানার শ্রীরামপুর অঞ্চলের গোপিনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। নন্দকুমার থানার সাওড়াবেরিয়া জালপাই ১ নম্বর অঞ্চলের রুপাহার গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ দাস অধিকারীর সাথে বছর ১৮-র ওই তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয়। দুই বাড়িতেই সেই বিয়েকে ঘিরে ছিল আনন্দের পরিবেশ। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে বউভাতের দিন সেই আনন্দই বদলে গেল চরম বিষাদে। জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ দাস অধিকারীর পাতানো বোন পূজা মণ্ডল বউভাতের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিল। নিজের ‘মনের মানুষ’কে অন্যের হয়ে যেতে চোখের সামনে দেখতে পারেনি সে। পূজা প্রতিহিংসার বশে চরম পদক্ষেপ নেয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় বাসের কন্ডাক্টর বিদ্যুৎ। ৩২ বছর বয়সী পুজার সঙ্গে যাতায়াতের পথেই আলাপ হয় তার। পরিবার সূত্রে খবর, বিদ্যুৎ বোন হিসেবে দেখতেন পুজাকে। কিন্তু অন্যরকম অনুভূতি ছিল পুজার মনে বিদ্যুতের জন্য। কোনো কাজ হয়নি মনের কথা জানিয়েও। বিদ্যুৎ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বোন হিসেবেই দেখেন পুজাকে। বিয়েতে আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন ‘বোনকে’। মনের মানুষকে অন্যের হতে দেখতে পারেনি বউভাতে এসে পুজা।
পুলিশ সূত্রে খবর, নতুন বউ রিয়ার কোল্ড ড্রিংকসের মধ্যে বউভাতের দিন ঘাস মারার বিষ মিশিয়ে দেয় পুজা। এর পরই রিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। নববধূ বমি করতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় তমলুকের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। নার্সিংহোমের তরফে তাঁকে কলকাতা রেফার করা হয় অবস্থা গুরুতর হওয়ায়। কিন্তু আর বাঁচানো যায়নি এরপর। মৃত্যু হয় নববধূ রিয়া দাসের।
এরপর অভিযুক্ত পূজা মণ্ডলকে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে নন্দকুমার থানার পুলিস। বুধবার তমলুক জেলা আদালতে তাঁকে তোলা হয়। ১৪ দিনের জেলা হেফাজতে অভিযুক্তকে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। পরিবার অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।