পিতামাতারা তাদের সন্তানদের কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল সেটা বোঝার জন্য কী না করে থাকেন? তাদের সন্তানদের নিরাপদ রাখতে, বাবা-মায়েরা নিজেদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাতে তারা বুঝতে পারে কখন কার দিকে বন্ধুত্ব এর হাত বাড়াতে হবে, কার উপর ভরসা করা যায়? আর আস্থা, বিশ্বাস থাকলেও তার পরিধি কতদূর হওয়া উচিত? ছেলে মেয়েদের সেই কিশোর বয়সে, বয়সন্ধির সময় সবচেয়ে বেশি বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যখন হরমোনের বিকাশ তাদের সমস্ত চিন্তাশক্তিতে হঠাৎই বিশাল পরিবর্তন আনে।
টিনএজ বা বয়সন্ধিকাল জীবনের এমন একটি পর্যায় যখন ছেলেমেয়েদের ঠিকভাবে গুরুত্ব না দেওয়া হলে, তারা যেকোনো সময় ভুল পথে চলে যেতে পারে। এই বয়সটা এমন যে কেউ যদি সঠিক গাইড পায় তাহলে সে খুব ভাগ্যবান কিন্তু যদি ভুল সঙ্গে আটকে যায় তাহলে তার কপালে দুর্ভোগ আছে। ঠিক এমন ভাবেই ১৪ বছর বয়সী কন্যার মা লেসি উইলসন তার মেয়ের সঠিক পথে চলা এবং ভুল মানুষের সঙ্গ কে বিশ্বাস করার পরিণতি কতোটা ক্ষতিকর বোঝাতে এমন একটি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যে তার কথা শুনে নেটিজনেরা তাকে ক্ষতিকারক মা বলা শুরু করে দেয়।
মেয়েকে সঠিক এবং ভুলের মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে মা লেসি উইলসন যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা কোনও পিতামাতার পক্ষে সহজ নয়। কিন্তু লেসি তার মেয়ের আস্থা চিরতরে জয় করতে কয়েকদিনের অবিশ্বাস কে মেনে নেওয়ার ঝুঁকি নিয়েছিলেন। লেসির মেয়ের বয়স মাত্র ১৪ বছর ছিল যখন তিনি একটি ছেলের ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করে মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করেন। ভুয়ো প্রোফাইল থেকে শহরে নতুন এসেছেন জানিয়ে তার সঙ্গে আড্ডা দেন। এরপর বাড়ির বাইরে দেখা করার অজুহাতে ডেকে নিয়ে অপহরণের চেষ্টা করে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় মায়ের এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে মানুষ।
লেসি একটি ভুয়া প্রোফাইলের মাধ্যমে নিজের মেয়েকে বাগানে ডেকে নিয়ে ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল। মেয়ে আসতেই পেছন থেকে তাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, তার উদ্দেশ্য ছিল মেয়েকে বোঝানো যে সে কীভাবে খুব সহজেই কারো প্রতারণার ফাঁদে পড়ে গেল। এভাবে যে কেউ তাকে বোকা বানিয়ে যেকোনো সময় অপহরণ করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মহিলা এই ঘটনা শেয়ার করার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নানা ধরনের মন্তব্য আসতে থাকে। কেউ একজন মা হিসেবে তার উদ্বেগ ও কর্মকাণ্ডকে ন্যায্যতা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ মনে করেন মা শিক্ষা দেওয়ার নামে টক্সিক হয়ে উঠেছেন তিনি। অন্যদিকে, ল্যাসি জানান কিভাবে তার আইডিয়া কাজ করেছে এবং তার মেয়ে যে এখন ১৬ বছর বয়সী তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছে। সে তার জীবনের সবকিছু তার মায়ের সাথে শেয়ার করে। অর্থাৎ তার দেওয়া শিক্ষা কাজে এসেছে।