গর্ভে মেয়ে আছে জানতে পেরে পুত্রবধূর জোর করে গর্ভপাত করান শাশুড়ি। শাশুড়ির নির্দেশে বধূর সম্মতি ছাড়াই গর্ভপাত করান চিকার দুই চিকিৎসক। গৃহবধূ ওই মহিলার অবস্থার অবনতি হলে তার পরিবারের লোকজন তাকে পাতিয়ালার রাজেন্দ্র হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার জীবন বাঁচাতে জরায়ুর একটি টিউব অপসারণ করতে হয়। নির্যাতিতার বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শাশুড়ি ও দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
হরিয়ানার কাইথাল জেলার চিকা এলাকার ভাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা কুলবীর বলেছেন যে তাঁর বোন পরমজিতের বিয়ে হয়েছিল ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গুহলার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সালেমপুর গামদির বাসিন্দা গগনদীপ সিংয়ের সাথে। সাড়ে তিন মাস আগে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন পরমজিৎ। ২রা মার্চ, তিনি তার শাশুড়ির সাথে চেকার রাধা কৃষ্ণ নার্সিংহোমে চেক-আপের জন্য গিয়েছিলেন। সেখানে ডাক্তার রেনু গুপ্তা তাকে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে বলেন।
এর পর পরমজিৎ তার শাশুড়ির সাথে আল্ট্রাসাউন্ড করাতে যায়। আল্ট্রাসাউন্ড করিয়ে তারা ফিরে এলে শাশুড়ি ডাঃ রেনু গুপ্তা ও ডাঃ মনোজ কুমারকে আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট দেখান। গর্ভে মেয়ে থাকায় পরমজিতের শাশুড়ির নির্দেশে দুই চিকিৎসকই তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানেই পরমজিৎকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়। তারপর তার সাথে কি হয়েছে এ বিষয়ে তার কোনো জ্ঞান ছিল না। ঘুমের ওষুধের কারণে, তিনি অজ্ঞান হয়ে যায়। জ্ঞান ফেরার পর তিনি প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন। এছাড়াও মারাত্মক রক্তপাত হতে থাকে।
এরপর দুই চিকিৎসকই পরমজিতকে ওষুধ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন এবং বলেন, ওষুধ খেলে ব্যথা ও রক্তপাত বন্ধ হবে। দিদি কুলবীর জানান এর পরে বাড়ি ফিরে গিয়েও বোনের ব্যথা কমেনি এমনকি রক্তপাত ও বন্ধ হয়নি। ঘটনার তিন দিন পর ৫ মার্চ তার আরো ব্যথা বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে পরমজিতের শ্বশুরগৃহে আসেন তার বাপের বাড়ির আত্মীয়রা।
পরমজিতের বাবা হরমাইল সিং আবারও নিজের মেয়েকে ডক্টর রেনু গুপ্তা ও মনোজ গুপ্তার কাছে নিয়ে যায়। উভয় চিকিত্সক পরমজিৎকে পেহোয়াতে নিয়ে যেতে বলেছিলেন কিন্তু তার বাবা পেহোয়া না নিয়ে তাকে পাতিয়ালার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান, সেখান থেকে তাকে রাজেন্দ্র হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করে জানান, জোর করে গর্ভপাত করানোর কারণে তার এমন রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এমনকি হাতুড়ে ডাক্তারদের কার্যকলাপে তার জীবন সংশয় দেখা দিয়েছে।
তার জীবন বাঁচাতে ডাক্তারদের তার জরায়ু থেকে একটি টিউব অপারেশন করে বাদ দিতে হয়েছিল। পরমজিতের বোন কুলবীরের অভিযোগ, তার দিদি এবং তার জামাইবাবুকে কিছু না জানিয়ে তাদের কোন সম্মতি ছাড়াই তার শাশুড়ির নির্দেশে দুই ডাক্তার মিলে তার দিদির গর্ভপাত করান।