পৃথিবীর বুকে আসতে চলেছে ভয়ঙ্কর বন্যা। প্লাবিত হবে বিশ্ব। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার (Space Research Center Nasa) করা একটি গবেষণায় উঠে এল এমনই মারাত্মক পূর্বাভাস। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। পৃথিবীর সমূদ্রের জোয়ার-ভাটার অনেকটাই নির্ভর করে চাঁদের আকর্ষণ বলের উপর। আর নাসার করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রদিক্ষণের সময় নিজের কক্ষপথে টলমল করছে চাঁদ। একে ‘চাঁদের ওয়াবলের (Moon’s ‘wobble’ ) বলে ব্যাখ্যা করেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। এই বিষয়ে করা গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এ।
এই গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে পৃথিবী কে প্রদক্ষিণ করার সময় চাঁদ নিজের কক্ষপথে একটু ঝুঁকে পড়ে। আর একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেই ঝুঁকে থাকা অবস্থায় চাঁদ ‘টলোমলো পায়ে হাঁটে’। আর এর ফলেই প্রভাব পড়বে জোয়ার ভাটায়। কক্ষপথে প্রদিক্ষণ করার সময় চাঁদের সাড়ে ১৮ বছরের একটি চক্র রয়েছে । এই সময়কালে চাঁদের প্রভাবে পৃথিবী তে সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে পৃথিবীতে বসবাসকারী মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনে। বিশেষত উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের জীবনের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
চাঁদের এই টলমল পায়ে হাঁটার জন্য ঘন ঘন দেখা দেবে ‘নুইস্যান্স ফ্লাড’ নামক বন্যার। বর্তমানে সাধারণত উপকূলবর্তী এলাকায় এই ধরনের বন্যা দেখা যায়। এই সময়ে জোয়ার চলাকালীন অন্য সময়ের চেয়ে জলস্তর ২ ফুটেরও বেশি বেড়ে যায়। শুনলে মাত্র ২ ফুট জলস্তর বৃদ্ধি আপাতভাবে খুব বেশি মনে না হলেও, এর প্রভাব অপরিসীম। উপকূলবর্তী শহর, গ্রামগুলি এর ফলে প্রভাবিত হয়।
নাসার এই গবেষণা বলছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই চাঁদের নিজের কক্ষপথে ঝুঁকে পড়ার ফলে ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পাবে ‘নুইস্যান্স ফ্লাডের’ সংখ্যা । আমেরিকার বেশিরভাগ উপকূলবর্তী অঞ্চলে এর ফলে জোয়ারের সময়ে জলস্তর আগের তুলনায় ৩-৪ গুণ বৃদ্ধি পাবে। নাসার তরফে অনুমান এই মারাত্মক বন্যার ফলে সমুদ্র এবং মহাসাগরগুলির জলস্তর বৃদ্ধি পাবে অস্বাভাবিক হারে। সমুদ্র উপকূলবর্তী দেশগুলির নীচু জায়গা চলে যেতে পারে জলের তলায়, এমনটাই জানিয়েছেন নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন।