দরকার পরছে না আর OTP বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরের। শুধুমাত্র ফোনে কথা বলা কালীনই ব্যাঙ্ক থেকে হাপিশ হয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা! চোখের নিমেষে যেন আলিবাবার চিচিং ফাঁক জাদু মন্ত্রের মতই কাজ করছে ‘সাইবার-জালিয়াত’ রা।
অচেনা নম্বর থেকে আসছে ফোন। কে ফোন করেছেন তা জানার জন্য ধরলেন ফোন । ওপার থেকে নিশ্চুপ। কোনও উত্তর না পেয়েও হেলো হেলো করে কিছুক্ষণ ধরে রাখলেন ফোন। এরপর ফোন নিজে থেকে কেটেও গেল। আপনি কিছু বুঝলেনও না বা সন্দেহও করলেন না। কিন্তু কিছুক্ষন পরই মেসেজ এলো ফোনে! ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব টাকা। এই নতুন অভিনব উপায়ে নাকি ফোন হ্যাক করেই টাকা গায়েব করছেন হ্যাকাররা।
এমনই প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে অসমের যোরহাট এলাকাতে মোহন কাকোটি নামের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর সাথে। প্রৌঢ় ওই ভদ্রলোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি করে নেওয়া হল ১২ লাখ টাকা। প্রৌঢ় জানিয়েছেন, ফোনে তার কাছে চাওয়া হয়নি OTP। ATM Card নিয়েও কোনো সমস্যা হয়নি। শুধুমাত্র একটি ফোন। তাতেই হাপিস সমস্ত টাকা!
প্রৌঢ়র অভিযোগ, সাইবার প্রতারকরা তার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার সময় বিশেষ উপায় তাঁর দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
মোহন কাকোটির ছেলে জানিয়েছেন, সাইবার জালিয়াতরা তার বাবার অ্যাকাউন্ট ৯ বার ট্রানজাকশন করেছে। তার মধ্যেই হাতিয়ে নিয়েছে ওই বিপুল অঙ্কের টাকা। তিনি প্রতারণার শিকার বুঝতে পেরে ওই ব্যাক্তি অসম রাজ্য পুলিশের সাইবার Cybercrime হেল্পলাইন নম্বরে অভিযোগ জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছিল পুলিশ।
ঠিক কী ভাবে ফাঁদে ফেলল জালিয়াতরা?
জানা গেছে মোহন কাকোটি তিনদিন আগে নিজের ফোন নম্বরে একটি মেসেজ পেয়েছিলেন। সেই মেসেজে তাকে বলা হয়, ওই অচেনা নম্বরে যদি তিনি ফোন না করেন তাহলে তাঁর মোবাইলের সিম কাজ করবে না। মোহন ভাবেন যে এটি হয়ত কোনো পরিষেবামূলক নম্বর। এরপরেই ওই নম্বর -এ ফোন করেন তিনি।
সেই নম্বরের ওপরদিকের ব্যাক্তি প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে মোহন কে ফাঁসিয়ে রাখেন। সেই ফাঁকেই তার নম্বর হ্যাক’ করে ওই টাকা তুলে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এর পরেই শুক্রবার একটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যায়। শনিবার সন্ধ্যায় আরও একটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যায়। টাকা লেনদেন করতে গেলে যে OTP লাগে, ফোনে সেটাও আসেনি। কীভাবে ওই কাজ করল সাইবার দুষ্কৃতীরা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।