Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

দিন আনি দিন খাই ক্ষেতমজুর থেকে কোটিপতি, ভাগ্য পরিবর্তনের করে দিল এক জোড়া জুতা!

রূপকথার গল্পের সিন্ডারেলার ভাগ্য বদলে দিয়েছিল কাচের জুতা। কাচের না হোক উলের জুতো কিছুটা একই ভাবে জীবন বদলে দিয়েছে মণিপুর রাজ্যের মুক্তামণি দেবীর। তবে এখানে শুধু ভাগ্যের নয়, মুক্তামণির জীবনে সাফল্য এনেছে তার কর্মক্ষমতাও। নিজের পরিশ্রম আর জেদের জোরেই জীবনযুদ্ধে নিজের জায়গা করে নিয়েছে মুক্তামণি দেবী। যে কারণে বাস্তব কাহিনী হয়েও তার গল্প রূপকথার চরিত্র সিন্ডারেলার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়।

সম্প্রতি বাংলা সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তামণি দেবীর (Muktamani Devi) জীবনের গল্প। মুক্তামণির বাড়ি মণিপুরের রাজ্যের কাকচিংয়ে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে নিজে পছন্দ করে বিয়ে করেছিলেন সহপাঠীকে। কিন্তু চার সন্তানের মা হলেও সেইভাবে কোনো আয় উপার্জন না থাকায় ধানক্ষেতে দিনমজুরের কাজ শুরু করে রোজগার করেন মুক্তামণি। দিন আনি দিন খাই অবস্থা তাদের। চূড়ান্ত অর্থাভাবে কাটছিল দিন। তাই ক্ষেতে দিনমজুরের কাজ করে বাড়ি ফেরার পরও চেষ্টা চলত কোনো না কোনো উপায়ে টাকা উপার্জনের। খাবার বানিয়ে রাস্তায় বিক্রি বাট্টা করা , উল বুনে হস্তশিল্প বানিয়ে বিক্রির চেষ্টা কিছুই বাদ যায়নি। যদি উপার্জন করা যায় অতিরিক্ত কিছু টাকা! চেষ্টা চলত নিরন্তর।

Manipur mother’s hand-knitted shoes found global market

কিন্তু অর্থাভাব মিটত না। স্কুলে পড়া মেয়ের পায়ের এক জোড়া নতুন জুতা কিনে দেওয়ারও অসম্ভব ছিল মুক্তামণির পক্ষে। ছেঁড়া জুতা পায়ে দিয়ে স্কুলে যেতে হত তার মেয়েকে। কিন্তু এমন অবস্থা দাড়ায় যে জুতো পায়ে পরেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। জুতা ছাড়া স্কুলে যাওয়া যাবে না বলে মেয়ের ছিঁড়ে যাওয়া জুতাটিকেই উল দিয়ে বুনে বানিয়ে দিয়েছিলেন মুক্তামণি। উলে বোনা জুতা দেখে অবশ্য চিন্তায় পড়ে গেল মেয়ে। এই জুতো দেখে যদি স্কুলে বকাবকি করে? কিন্তু উল্টে মিলল প্রসংশা। এমন জুতো কিনতে চেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করল স্কুলের দিদিমনিরাও। মাকে এসে মেয়ে কথা জানাতে তিনিই নতুন উলের জুতা বানিয়ে দেন দিদিমনিদের জন্যে। সঙ্গে মাথায় আসে নতুন ব্যাবসার উদ্যোগ। চিন্তা করলেন উলের জুতা বানিয়েও তো বিক্রি করা যায়। মুক্তামণির উলের জুতার ব্যাবসার যাত্রা শুরু তখন থেকেই। এখন যা সারা বিশ্বে সমাদৃত।

একসময়ে মেয়ের ছেড়া জুতো পাল্টে একজোড়া নতুন জুতা কেনার টাকাও ছিল না। আর এখন তার তৈরি জুতা রপ্তানি হয় সারা পৃথিবীর নানান দেশে। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, মেক্সিকো, এমনকি ইউরোপের ফ্রান্সেও চাহিদা রয়েছে মুক্তামণির তৈরী উলের জুতার।

মুক্তামণি এখন মণিপুরের বৈগ্রাহিক নাম। সেখানকার এক নম্বর নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালাম প্রশংসা করেছিলেন মুক্তামণির কাজের। এমনকি তার উত্থানের লড়াইয়েরও।

Related posts

এই দোকানের কচুরীর স্বাদে মুগ্ধ হতেন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণদেব! সেই প্রাচীন দোকান আজও আছে কলকাতার বুকে

News Desk

প্লেনে পার্লে-জি বিস্কুটের কারণে রাতারাতি ভাইরাল এই ব্যক্তি? সত্যতা জানলে আপনিও অবাক হবেন

News Desk

দ্রুত ছড়াচ্ছে ওমিক্রন! ২০০ পার করল আক্রান্তের সংখ্যা! রাজ্যগুলিকে সতর্ক করল কেন্দ্র

News Desk