ভারতের উত্তর পূর্বের রাজ্য অসমে (Assam) প্রায় ১০০ বছর পরে দেখা গিয়েছে ম্যান্ডারিন হাঁস (Mandarin duck)। এক শতাব্দীরও বেশি সময় পরে অসমে দেখা মিলল এই রঙ বাহারি হাঁসের। যদি সঠিক ভাবে হিসাব করা যায় তাহলে হিসেবে দাড়ায় ১১৯ বছর পরে। কেননা আসাম রাজ্যে তাদের শেষবার দেখা গিয়েছিল ১৯০২ সালে। তারপর থেকে নিত্যনতুন বেড়ে চলা পরিবেশ দূষণ, বিশ্ব উষ্ণায়ন, এবং আরো নানা বিপর্যয়ে রীতিমত বিধ্বস্ত পৃথিবীর জীব জগতের ভারসাম্য। মানুষের স্বৈরাচারের ফলে আর নগর কেন্দ্রিক সভ্যতার বিস্তারে হারিয়ে যাচ্ছে বাকি জীবজগৎ।
বাহারি রঙের এই হাঁস বিশ্বের নানান দেশে দেখা গেলেও ম্যান্ডারিন হাঁসের অসমে খুব একটা দেখা যায় না। এই হাঁস অসমে দেখতে পাওয়া যাওয়ার পর টুইটারে তা শেয়ার করেছেন মাহিন্দ্রা গ্রুপের-এর চেয়ারম্যান আনন্দ মহিন্দ্রা। তারপরেই ভাইরাল এই ভিডিও। অবশ্য অসমে দেখা পাওয়া এই ম্যান্ডারিন হাঁসগুলি আনন্দ মহিন্দ্রা নিজের চোখে দেখেননি। বেশ কিছুদিন আগে এই হাঁসগুলির ভিডিও টুইটারে দিয়েছিলেন Eric Solheim নামের এক ব্যক্তি। সেটাকেই নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করেছেন তিনি।
অবশ্য ১০০ বছর পরে এই প্রজাতির হাঁসের দেখা মেলার কথা আগেই সামনে এনেছিল ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’-র একটি। কিছুদিন আগে তারা অসম থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে সাদা ডানার উড হাঁসের সন্ধান করতে এসেছিল। তখনই তারা আসামে এই ম্যান্ডারিন হাঁসটিকে দেখতে পায়। হঠাৎ তাদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে একটি মাগুরি বিলে জলে ভাসছে একটি ম্যান্ডারিন ডাক। একটি স্পট বিলড ডাকের সঙ্গে ভেসে বেড়াতে দেখা যায় তাকে। ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া’ দলের মূল আফতাব আহমেদ জানান, তথ্য অনুযায়ী ১৯০২ সালে শেষ এই হাঁসের দেখা মিলেছিল এই রাজ্যে। ম্যান্ডারিন হাঁস সাধারণত ভারতে আসে না। কিন্তু প্রচণ্ড শীতে তারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার সময় কখনও ভুল করে আকাশে দলছুট হয়ে কেউ কেউ অন্য হাঁসেদের দলের সঙ্গে ভিড়ে ভারতে ঢুকে পড়ে। এ বারেও তেমনই কোনো ঘটনা হাঁসি ফুটিয়েছে পাখিপ্রেমীদের মুখে।
এই ম্যান্ডারিন হাঁস এর বাস মূলত রাশিয়া এবং চিনের পূর্ব দিকে। ব্রিটেন , যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, জার্মানি, স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড এবং আরও অনেক দেশেই দেখা মেলে এদের। এরা নানা বাহারি রঙের ডুবুরি প্রজাতির হাঁস। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে ক্রমশই কমছে পৃথিবীতে এদের সংখ্যা। বেশী রঙের বহরে দেখতে বেশী সুন্দর আসলে পুরুষ হাঁসই। পুরুষ ম্যান্ডারিন হাঁসের সারা শরীর জুড়ে নানান রঙের ছড়াছড়ি। স্ত্রী হাঁসের দেহে এত রঙের বাহার নেই, বেশ সাদামাটা।