করোনা মহামারী শুধু শারীরিকভাবে নয় আরো নানাভাবে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে বিহারের এই ঘটনায় তা আবারও স্পষ্ট হল। বিহারের আররাহ শহরে ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মায়ের সামনে নিজেকে গুলি করে হত্যা করেছেন। এক পুলিশ কর্মকর্তা এই তথ্য মিডিয়া কে জানিয়েছেন। সূত্র অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, আরার পাকপি এলাকার বাসিন্দা মৃত সুবিমল কিশোর সিং-এর মাথার ওপর ২০ লক্ষ টাকার উপর ঋণ ছিল। তার মা কালবতী দেবীর বিবৃতি অনুসারে, তার ছেলে তার ব্যবসার জন্য স্থানীয় ঋণদাতাদের কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ধার হিসাবে নিয়েছিল। কিন্তু এরপর হঠাৎই পৃথিবীতে হানা দেয় করোনাভাইরাস। করোনা মহামারী এবং লকডাউনের কারণে তার ব্যবসা ঠিকমত চলতে পারেনি এবং সে ধার নেওয়া টাকা পরিশোধ করতে অক্ষম ছিল। কালবতী দেবী পুলিশের কাছে দেওয়া তার জবানবন্দিতে বলেছেন, “গত কয়েক মাস ধরে, ঋণদাতারা তাদের টাকার জন্য ঘন ঘন তার ছেলেকে ফোন করছে। সুবিমল টাকা ফেরত দিতে না পারায় হতাশ থাকতো। ঋণের চাপে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল সে।”
কালবতী দেবী বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাড়ি ফেরেন সুবিমল। রাতের খাবার খেয়ে সে নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপরে, কিছু সময় পর সুবিমল আমাকে তার শোবার ঘরে আসতে বলে। আমি যাই। আমি সেখানে গেলে ছেলে আমায় বলে, ঋণদাতারা তাকে ক্রমাগত ফোন করছে। টাকা চাইছে, সে কোথা থেকে টাকা দেবে। সে চাপ সামলাতে পারছে না।” এরপর হঠাৎ নিজের দেশি পিস্তল বের করে নিজেকে গুলি করে। বিমল গত কয়েক মাস ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তাই তার বোন তার সোনার গয়না বিক্রি করে তাকে ১২ লাখ টাকা ধার দেয়। তবে সুদসহ মূল পরিমাণ ৮ লাখ টাকা এখনও বাকি ছিল।
তার স্ত্রী নিশা সিংও ঋণের বোঝার কারণে তাকে ছেড়ে চলে যান। আরাহর নওয়াদা থানার তদন্তকারী অফিসার আরপি শর্মা বলেন, ‘আমরা নির্যাতিতার মায়ের বয়ান রেকর্ড করেছি। এছাড়াও এফএসএল টিমও ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা, বিশেষ করে অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। আমরা ভিকটিমের মায়ের বক্তব্য পরিস্থিতিগত প্রমাণ সহ যাচাই করছি। মৃতদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে।