একজন মানুষ প্রেমে যে কোনো সীমা পর্যন্ত যায়। ভালোবাসা যেখানে দুজন মানুষকে কাছাকাছি নিয়ে আসে, একই সাথে এই ভালোবাসা একজন মানুষের আচরণ অনেক সময় বিষাক্তও করে তোলে। সোশ্যাল মিডিয়ায়, একজন মহিলা তার প্রেমিকের গল্প শেয়ার করেছেন, যার সাথে থাকতে মহিলা তার দেশ ছেড়েছিল। এই মহিলা কি জানত যে যার জন্য সে তার দেশ ছেড়েছে, একদিন সে তার জীবনের শত্রু হয়ে উঠবে। জানা গেছে সন্দেহ হওয়ায় ওই নারীর প্রেমিক তাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। সেই মহিলা ভাগ্যবানই বলতে হয় যে ১১ বার ছুরিকাঘাতের পরেও তার জীবন রক্ষা পেয়েছিল।
সিনথি ডলজোভা, মূলত চেক প্রজাতন্ত্রের বাসিন্দা। ২০২০ সালে তার এখনকার প্রাক্তন প্রেমিক জ্যাক সাটনের সাথে তরুণীর দেখা হয়েছিল। সে সময় দুজনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া ছিল। সিনথির মনও বলেছিল যে জ্যাক তার জন্য এক নিখুঁত জীবনসঙ্গী। তবে সিনথির বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়রা তাকে জ্যাক এর সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সিন্থি সেই সময় জ্যাকের প্রেমে এতটাই পাগল ছিল যে সে তার মধ্যে ভুল কিছু দেখতে পায়নি। কিন্তু একটি দুর্ঘটনার পরে, তার চোখ থেকে অন্ধ ভালবাসার পট্টিটি খুলে যায় এবং এখন সে জ্যাকের সাথে কোনও ধরণের সম্পর্ক থাকার জন্য অনুতপ্ত।
২৩ বছর বয়সী সিনথি জানিয়েছেন যে তিনি জ্যাকের সাথে থাকার জন্য তার দেশ ছেড়ে এসেছিলেন। তিনি জ্যাকের জন্য যুক্তরাজ্যে আসেন এবং দুজনে একসাথে থাকতে শুরু করে। জ্যাক সিন্থিকে তার কোন বন্ধুর সাথে কথা বলতে দিত না। একই সাথে তাকে তার নিজের পরিবারের সাথেও দেখা করতে নিষেধ করতেন। সিনথি যখনই বাইরে যেত, সে তার অন্তর্বাস পরীক্ষা করত। শুধু তাই নয়, অন্য পুরুষের সঙ্গে রাত কাটিয়েছে এমন অভিযোগও আনতো। কিন্তু ঝগড়া হবার কিছু দিন পর থেকেই সে আবার সিনথির সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে থাকতো, যার কারণে সিনথি তাকে ক্ষমা করে দিত। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি হতো।
২০২১ সালে, সিন্থি ব্রেক আপ করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এক বন্ধুর বাড়িতে চলে যায়। এটি জ্যাক সহ্য করতে পারেনি। সে তাঁকে রেস্তোরাঁয় ডেকেছিল শেষবারের মতো সিনথির সঙ্গে দেখা করার জন্য। সেখানে সে সিনথির পার্স থেকে তার আইডি কার্ড চুরি করে এবং সিনথিকে ফোন করে তার সাথে একান্তে দেখা করতে বলে। কিন্তু সিনথি সেখানে পৌঁছতেই জ্যাক তাকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। ছুরি দিয়ে ১১ বার আঘাত করার পর তার মনে হলো সিঁথি নিশ্চয়ই মারা গেছে। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু সিনথির ভাগ্য ভালো ছিল। তার জীবন রক্ষা পেল। সিন্থির অভিযোগের পর, জ্যাককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তদন্তে দেখা গেছে, সিন্থির ওপর হামলার আগে জ্যাক গুগলে সার্চ করে দেখেছিলেন যে কীভাবে কাউকে খুন করা যায়। এখন মানুষের সাথে তার গল্প শেয়ার করে, সিনথি সেই সব নারীদের সচেতন করছেন যারা প্রেমে অন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেছিলেন যে প্রতিটি সম্পর্কের মধ্যে রেড অ্যালার্ট আছে কিনা সেটি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত।