কানে এসেছিল চিৎকারের শব্দ। শুনতে পেয়েছিলেন ভাইয়ের ভয়ার্ত গলার চিৎকার ‘দাদা ছেড়ে দে..’ চিৎকার শুনে পরিবারের বাকিরা ছুটে আসার আগেই দাদার হাতের হাঁসুয়া ভাইয়ের বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে। সোয়েটারের ওপর দিয়েই বুকের বাঁ দিক চিরে ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে এসেছে রক্ত। বাবার সামনেই কাতরাতে কাতরাতে শেষ হয়ে গেল ছোট ছেলে। ঘটনার পর পলাতক দাদা।
জানা গিয়েছে বিষয়-আশয় নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদ লেগেই থাকত। আর এই পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে অশান্তির জেরেই সন্ধায় ছোট ভাই যখন ঘুমোচ্ছিল তখন ঘরে ঢুকে হাঁসুয়া দিয়ে খুন করল দাদা। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মুরারই থানার দরগাতলা এলাকায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল ছড়ায় এলাকায়। মৃত যুবকের নাম আবসার আলি (২২)। অভিযুক্ত দাদার নাম হানি আব্বাস আলি। ভাইয়ের খুনের পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত দাদা। ইতিমধ্যে মুরারই থানার পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পৈত্রিক জমি বিক্রি করা ঘিরে বেশ অনেকদিন ধরেই অশান্তি চলছিল দুই ভাইয়ের মধ্যে। ছোট ভাই আবসার আলি ও বড় ভাই আব্বাসের মধ্যে এই নিয়ে প্রায়শই বাদানুবাদ হত। সূত্রে খবর, আব্বাস তার বাবাকে পারিবারিক জমি বেঁচে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু আর কারোর জমি বিক্রি করতে সায় ছিল না। সোমবার রাতেও এই জমি বিক্রি নিয়ে পরিবারের সকলের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সে সময় দুই ভাইয়ের মধ্যে আবারও ঝগড়া বাঁধে। এরপরেই ভাই ঘুমিয়ে থাকার সময় ঘরে ঢুকে হাঁসুয়ার কোপ চালায় দাদা আব্বাস আলি।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, কিছু মাস আগে পাশের গ্রামে বিয়ে করেছেন মৃত আবসার আলির দাদা আব্বাস। কিন্তু বিয়ের কয়েকদিন পরই তার স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি চলে বাপের বাড়ি চলে যান। তাদের বক্তব্য স্ত্রীই স্বামীকে বলেন পরিবারকে চাপ দিয়ে নিজেদের সম্পত্তি বুঝে নেবার। পরিবারের সকলেই জানতো সেটা। এটাই তারা জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের সামনে, এমনটাই জানিয়েছে TV9 বাংলা। স্ত্রীর কথামতো তারপর থেকে আব্বাস বাবাকে চাপ দিতে থাকেন, জমি সম্পত্তি বাটোয়ারা করে দেওয়ার জন্য। আব্বাসের ভাই আবসার এখনো বিয়ে করে সংসার পাতেনি। এর আগে ভাই নিজের টা বুঝে নিচ্ছেন এই নিয়ে দুই ভাইয়ে অশান্তি ছিলই। প্রতিবেশীরাও মাঝেমধ্যেই দেখতেন অশান্তি হতে। কখনো কখনো প্রতিবেশীরা এসে সেই ঝামেলা থামাতেন। কখনো এটা তাদের একান্ত পারিবারিক বিষয় বলে দখল দিতেন না। সোমবার সন্ধ্যাতেও একই ভাবে চিৎকার শুনতে পান প্রতিবেশীরা। দৌড়ে এসে দেখেন ভাইকে মেরে ফেলেছেন দাদা।