অনেক রাত পর্যন্ত চলছিল চিৎকার-চেঁচামেচি গোলমাল। কিছু একটা সন্দেহ করে প্রতিবেশীরা খবর দেয় নিকটবর্তী থানায়। পুলিশ পৌছলে জানা যায় ঘটে গেছে বীভৎস ঘটনা। আসামের করিমগঞ্জ জেলা থেকে একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে এক স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। স্বামী প্রথমে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করার পরে তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার সময় এই সব ঘটে। শুধু তাই নয়, স্ত্রী মারা গেলে তার অর্ধ গলিত লাশ ঘরেই দাফন করে ওই ব্যক্তি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ি থেকে স্ত্রীর অর্ধ-দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে।
আসলে ঘটনাটি আসামের করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি থানা এলাকার। পুরো ঘটনাটি ঘটেছে এখানকার ময়না গ্রামে। জামালউদ্দিন নামে অভিযুক্ত ব্যক্তি রোববার রাতে তার দ্বিতীয় স্ত্রী খুদেজা বেগমকে নিজ বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে তার অর্ধদগ্ধ লাশ ঘরের ভিতরেই কবর দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, যৌতুক নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলছিল। অনেকক্ষণ ধরে বিবাদ চলে।
গোলমাল শুনে রবিবার রাতেই পুলিশে খবর দেন প্রতিবেশীরা। পরদিন সকালে পুলিশ কর্মকর্তারা এসে জামালের বাড়িতে তল্লাশি করলে জামালের স্ত্রীর অর্ধ-দগ্ধ লাশ দেখতে পান। সোমবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এরপর অভিযুক্ত জামালউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং যৌতুক নিষেধাজ্ঞা আইন এবং আইপিসির (IPC) অন্যান্য ধারায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাথারকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ সমরজিৎ বসুমতারি জানিয়েছেন এই খুনের ঘটনাটি যৌতুকের কারণে হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা। জামালের প্রথম স্ত্রী তাকে ছেড়ে অন্য একজনকে বিয়ে করেছিল। এরপর পরিবারের লোকজন তাকে বোঝালে জামাল প্রায় দুই বছর আগে আবারও পাশের গ্রামের খুদেজা বেগমকে বিয়ে করেন।
বিয়ের কয়েক দিন যেতে না যেতেই অবশ্য জামালের ক্রমবর্ধমান যৌতুকের দাবি দাওয়াতে বিরক্ত হয়ে খুদেজা বেগমও বাবার বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। ১৫ দিন আগে সে তার স্বামীর বাড়িতে ফিরতে রাজি হয়, তারপরেই অভিযুক্ত তাকে হত্যা করে। বর্তমানে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শিগগিরই এ বিষয়ে শুনানি শুরু হবে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।