তৃতীয় পক্ষের স্ত্রীকে মেরে ফেললেন স্বামী। আর শুধু তাই নয় দেহ সহ প্রমাণ লোপাট করতে নির্মীয়মাণ শৌচালয়ে দেহ পুঁতে তার উপর দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে কংক্রিট যাতে কাকপক্ষীতেও টের না পায়। কিন্তু বজ্র আঁটুনির ভেতরেও ফস্কা গেরো যে থেকেই গেল। নেশার ঘোরে খুনের নিজ মুখেই বলে ফেললেন অভিযুক্ত স্বামী। আর তাতেই ছড়িয়ে পড়ে খুনের খবর। নিজের ভুল বুঝতে পেরেই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত। এই ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থাকলো নদিয়ার জেলার ধানতলা থানার শংকরপুর ত্রিনাথতলা। অভিযুক্ত স্বামীর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
নদিয়ার ধানতলা থানার শংকরপুর ত্রিনাথতলার বাস করতেন রবীন্দ্রনাথ রায়। বয়স চল্লিশের আশেপাশে। পেশায় টোটো চালক তিনি। তিনটি বিয়ে রবীন্দ্রনাথের। অভিযোগ রবীন্দ্রনাথের অত্যাচারের কারণে আগেই দুই স্ত্রী ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে চলে গেছিল। বয়স্ক বাবা এবং বছর তেরোর ছেলেকে নিয়ে বাস করত রবীন্দ্রনাথ। জানা গেছে ৪ মাস খানিক আগ্র আবারও বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন ওই ব্যক্তি। এরপরেই বিয়ে করে উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা মাম্পি চক্রবর্তীকে। তৃতীয়বারের জন্য বিয়ে করে সংসারী হয় রবীন্দ্রনাথ রায়।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই দু’জনের মধ্যে প্রায়শঃই অশান্তি লেগে থাকত। কিন্তু বাসিন্দারা বিশেষ আমল দিত না। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা নিজের বাইক বিক্রি করে দেয় ওই ব্যক্তি। বাইক বিক্রির টাকা হাতে আসতেই বন্ধুবান্ধব নিয়ে মদের আসর বসায় রবীন্দ্রনাথ। মদের আড্ডাতেই নেশার ঘোরে বন্ধু-বান্ধবের সামনে ফাঁস করে দেয় নিজের কুকীর্তি। জানায় স্ত্রীকে খুন করে পুঁতে ঢালাই করে দিয়েছে সে। গত ২২ শে ফেব্রুয়ারি রাত্রিবেলা এই ঘটনা ঘটায় রবীন্দ্রনাথ। স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে তাঁকে খুন করেছে বলেই জানায় সে। পরে সম্বিত ফিরতেই এলাকা ছাড়ে রবীন্দ্রনাথ।
এদিকে, রবীন্দ্রনাথের সাথে ওই মদের আসরে যারা উপস্থিত ছিল তাদের মুখে মুখে গোটা এলাকায় রটে যায় তার স্ত্রীকে খুনের বিষয়টি। ঘটনাটি জানানো হয় ধানতলা থানায়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে রবীন্দ্রনাথের বাড়ির নির্মীয়মাণ শৌচালয়ের ঢালাই করা মেঝে খুঁড়ে বার করে তার স্ত্রী মাম্পির মৃতদেহ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এদিকে গা-ঢাকা দিয়েছে রবীন্দ্রনাথ। স্ত্রীকে এমন নৃশংসভাবে খুন এর কারণ ও স্পষ্ট নয়। রবীন্দ্রনাথের বৃদ্ধ পিতা এবং বালক ছেলে এই বিষয়ে কিছু জানতেন না বলে জানা গেছে। রবীন্দ্রনাথের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।