বর্তমান যুগে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই ভাবে ইন্টারনেটে দেখানো পদ্ধতিতে তারা সব কিছু করে ফেলতে পারবে। বিশেষত ইন্টারনেট থেকে কেউ যদি নিজের চিকিৎসা করতে যায় তার ফল হতে পারে ভয়াবহ। আর এই ঘটনায় ইউটিউব (YouTube) দেখে করার চেষ্টা করা হয়েছে সরাসরি অপারেশন যার কারণে প্রাণ হারাতে হলো ২৮ বছরের ওই যুবককে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশে (Andhra Pradesh)। যেখানে এক যুবক নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করতে চেয়েছিল। আর এই কারণেই সে দ্বারস্থ হয়েছিল ইউটিউব এর। কিন্তু তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হওয়ার আগে অপারেশন টেবিলেই মারা গেল ওই যুবক।
জানা গেছে ইউটিউবের টিউটোরিয়াল ভিডিওর সাহায্য নিয়ে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তনের অস্ত্রোপচার (Sex Reassignment Surgery) করেছিলেন। সাথে ছিল দু’জন ফার্মাসি ছাত্র। চরম অপরিণামদর্শী সেই অস্ত্রোপচারেই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেল। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সেই দুই ফার্মাসি ছাত্র মাস্তান ও জিভাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, মৃত যুবকের নাম শ্রীকান্ত (Srikanth)। শ্রীকান্ত অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের প্রকাসম জেলার (Prakasam District) বাসিন্দা। কাজের সুত্রে বর্তমানে হায়দরাবাদেই (Hyderabad) থাকতেন তিনি। বেশ কিছুদিন হল স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেছে। বর্তমানে একাই বসবাস করতেন তিনি। জানা গেছে কোনো কারণে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তনে আগ্রহী ছিলেন তিনি। তার ইচ্ছা ছিল তিনি মুম্বাই গিয়ে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করেই সেক্স চেঞ্জ অপারেশন করবেন। কিন্তু তাঁকে অন্য বুদ্ধি দেয় দুই ফার্মাসি পড়ুয়া। তারা বলে অনেক কম খরচে তারাই শ্রীকান্তকে সেক্স চেঞ্জ অপারেশন করে দেবেন। এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান শ্রীকান্ত।
এই অপারেশন করার জন্য তিনজন মিলে নেল্লোরে (Nellore) একটি লজরুম ভাড়া করেন। তাদের ঠিক করা দিনে অভিযুক্ত দুই ফার্মাসি পড়ুয়া মাস্তান ও জিভা ওই লজের রুমেই ইউটিউবের টিউটোরিয়াল দেখে শ্রীকান্তের অস্ত্রোপচার শুরু করে দেন। কিন্তু অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে সঠিক পরিকাঠামো এবং কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মারাই যায় শ্রীকান্ত। তারা শ্রীকান্তের মৃতদেহ সেখানেই ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
লজের কর্মীরা পরে লজের রুমে শ্রীকান্তর মৃতদেহ দেখতে পেলেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসে। এই রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ। সূত্র ধরেই দুই অভিযুক্ত মাস্তান ও জিভাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের সূত্রে জানানো হয়েছে, শ্রীকান্তের ময়নাতদন্তের যে রিপোর্ট এসেছে তাতে মৃত্যুর কারণ হিসাবে স্পষ্ট যে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও অতিরিক্ত মাত্রার ঘুমের ওষুধের ডোজের কারণেই মৃত্যু হয়েছে ২৮ বছরের যুবক শ্রীকান্তর।