বেড়ানোর আনন্দ পরিণত হল বিষাদে। দিঘায় (Digha) বেড়াতে এসে কাঁকড়া খেয়ে মৃত্যু হল বেহালার এক যুবকের। শনিবার দুপুরে ওল্ড দিঘায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম সৌম্যদীপ সিকদার (২২)। দক্ষিণ কলকাতার বেহালার বাসিন্দা সৌম্যদীপ পরিবারে সঙ্গেই দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। সমুদ্র স্নানের পর সৈকতে কাঁকড়া খাওয়ার পর থেকেই অসুস্থ বোধ করেন সৌম্যদীপ। তারপর হোটেলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরেই মার্কেটিং অনার্স নিয়ে স্নাতক হন ওই যুবক। একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরিও করতেন। টানা তিনদিনের ছুটি পেয়ে পরিবারের সঙ্গেই শুক্রবার সন্ধ্যায় দিঘায় বেড়াতে আসেন সৌম্যদীপ। ওল্ড দিঘার একটি হোটেলে উঠেছিলেন তাঁরা। শনিবার সকাল থেকে পরিবারের সকলের সঙ্গেই সমুদ্রস্নানে নামেন সৌম্যদীপ। তারপর সৈকতে বেড়াতে আসা অন্যান্য পর্যটকদের সঙ্গে মাছ ভাজা, কাঁকড়া খাওয়ায় মজেছিলেন সৌম্যদীপও। কাঁকড়া খেয়ে হোটেলে আসার পর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন। তারপর তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
সৌম্যদীপের মাসি সুস্মিতা মজুমদার বলেন, ‘সৌম্যদীপের চিংড়ি মাছ, কাঁকড়ায় অ্যালার্জি ছিল। হাঁপানির সমস্যাও ছিল। সেজন্য আজ হোটেলে আমরা কাঁকড়া ভাজা খেলেও সৌম্যদীপ ডিম-ভাত খায়। তবে সৈকতে কাঁকড়া ভাজা খেয়েছিল। তারপর থেকেই সে অসুস্থ বোধ করে।’ দুপুরের খাবার খাওয়ার পর থেকেই সৌম্যদীপের গলা জ্বালা শুরু হয়। তারপর তিনি একাই হোটেলের ঘরে শুতে চলে যান। কিছুক্ষণ পর পরিবারের এক সদস্য ওই ঘরে ঢুকে দেখেন অচৈতন্য অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন সৌম্যদীপ। দাঁতে দাঁত লেগে গিয়েছে এবং জিভ অনেকটা বেরিয়ে এসেছে। খবরটি হোটেলে চাউর হতে সময় লাগেনি। হোটেলের কর্মীরা চামচ দিয়ে সৌম্যদীপের দাঁত খোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তারপর তড়িঘড়ি তাঁকে দিঘা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। দিঘা হাসপাতালের চিকিৎসক সৌম্যদীপকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অ্যালার্জির সমস্যা থাকায় কাঁকড়া খেয়েই সৌম্যদীপের মৃত্যু হল বলে তাঁর পরিবারের অনুমান। তবে ঘটনার তদন্তে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে দিঘা পুলিশ। সৌম্যদীপের দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হবে এবং ময়নাতদন্তের পরই দেহটি তাঁর পরিবারের হাতে দেওয়া হবে। অর্থাৎ রবিবারের আগে সৌম্যদীপের দেহ পাবে না তাঁর পরিবার। দিঘায় বেড়াতে এসে এভাবে তরতাজা যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর মা, মাসি সহ পরিবার-পরিজনরা।