সাপ আর মানুষের সম্পর্ক একটু জটিল। মুলত সাপ মানুষ থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করে। মানুষও সাপকে একটু ডরিয়েই চলে। সাপের বিষ, দংশন ইত্যাদি মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। আমাদের দেশে প্রতিবছর সাপের কামড়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়৷ বেসরকারি মতে, সংখ্যাটা লক্ষাধিক৷ কিন্তু এর থেকে আলাদাও হয় কিছু কিছু মানুষ। যেমন এই যুবক মনমোহন। ছোট থেকেই পশু, পাখি বিশেষত সাপেদের ওপর তাঁর দারুণ মায়া। পশুপ্রেমী এই যুবক চোখের সামনে কোনও সাপকে আহত হতে দেখলে শুশ্রূষা করেন। তার পর সেই সাপকে বাঁচাতে ছেড়েও আসেন গভীর জঙ্গলে। কিন্তু প্রচলিত প্রবাদ বলে সাপ কখনো কারও আপন হয় না। সেই ভাবেই সাপের প্রতি এত মায়া থাকা সত্বেও সেই সাপের কামড়েই মৃত্যু হল তার। তাও রাখি পরিয়ে নিবিড় বন্ধন স্থাপন করতে গিয়ে! পুরো ঘটনাটা ক্যামেরা বন্দী হওয়ায় দৃশ্যটি শেয়ার হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
বিহারের সরনের ঘটনা। বিহারে কিছুদিন আগেই রাখি উপলক্ষে রাখি বন্ধন উৎসবে এক যুবক এক নতুন ভাবে এই অনুষ্ঠান উদযাপন করতে যান। সাপেদের প্রতি তার ভালোবাসা ও সুরক্ষার অঙ্গীকার স্বরূপ তাদের রাখি পরাতে গেছিলেন। সাপ দু’টিকে পঁচিশ বছর বয়সী মনমোহনের রাখি পরানোর ভিডিও এখন ভাইরাল। ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, দু’টি সাপের লেজ ধরে রয়েছেন মনমোহন। তাদের রাখি পড়াচ্ছেন। তার বোন ও মা তাকে রাখি পরানোর কাজে সাহায্য করছে।অভিনব রাখি বন্ধন দেখতে দেখতে জড়ো হয়েছেন বহু উৎসুক গ্রামবাসী। এর পরই সাপের লেজ ধরা অবস্থায় একটি সাপকে টিকা পরাতে যাওয়ার সময় তার চোখ অন্যদিকে সরে যায়। তাতেই পরিণতি হল মর্মান্তিক। সামান্য সুযোগেই একটি সাপ ঘুরে এসে তাঁর পায়ে দংশন করে। সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে উঠে দাড়িয়ে সাপটিকে পা থেকে ঝেড়ে ফেলে দেন মনমোহন। ভিডিওটিতে এই অবধিই দেখা যায়।
কিন্তু পরে এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানায় আর বাঁচানো যায়নি মনমোহন কে। সাপে কামড়ানোর পর প্রথম কিছুক্ষন কোনো সমস্যা অনুভব না করলেও পরে ঝিমিয়ে পরে তিনি। তাঁকে নিকটবর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। ততক্ষণে বিষ তার সারা শরীরে ছড়িয়ে পরে। তার এমন মৃত্যুতে স্তম্ভিত গ্রামবাসীরা। কেনোনা বহ বছর ধরে জখম সাপেদের সেবা শুশ্রুষা করতেন ওই যুবক। কেউ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হলে তাঁদেরও চিকিৎসা করতেন তিনি। শেষে কিনা সাপের কামড়ে নিজেই মারা গেলেন।