কেউ মারা গেলে বা বলা যায় কারো অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে সেই মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়। কিন্তু কখনও শুনেছেন জীবিত মানুষকেই পাঠিয়ে দেওয়া হল ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে। হ্যাঁ ঠিক এমনটাই ঘটেছে এক নামি হাসপাতালে।
মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র-চাম্বল অঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল জয়রোগ্য চিকিৎসালয়। সেইভ জয়রোগ্য হাসপাতালে চিকিৎসকদের বড় গাফিলতির এক ঘটনা সামনে এসেছে। এখানে চিকিৎসকরা ৩১ বছর বয়সী এক জীবিত মহিলাকে মৃত ঘোষণা করেন। শুধু তাই নয়, ওই নারীকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে স্থানান্তরও করে দেন। মহিলার স্বামী মর্গে গিয়ে স্ত্রীর পালস পরীক্ষা করলে দেখা যায় মহিলাটি তখনও বেঁচে আছে। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মহোবার বাসিন্দা নিপত সিং রাজপুত জানিয়েছেন যে দু’দিন আগে তাঁর স্ত্রী জামবতীর একটি বাইকের সঙ্গে দুর্ঘটনা হয়েছিল। যার কারণে তিনি গুরুতর রূপে আহত হন। তারা তাকে ঝাঁসির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর বৃহস্পতিবার সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গোয়ালিয়রে রেফার করেন। বৃহস্পতিবার রাতে নিপত সিং তার স্ত্রী জামবতীকে নিয়ে গোয়ালিয়রের জয়রোগ্য হাসপাতালে পৌঁছান। এখানে তাকে ট্রমা কেয়ার সেন্টার এ ভর্তি করে চিকিৎসা করা হচ্ছিল।
পরদিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জামবতীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আশ্চর্যের বিষয়, ডাক্তাররা ইসিজি না করেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শুধু তাই নয়, জীবিত নারীকে মৃত আখ্যা দিয়ে তার লাশও পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দেন। তবে স্বামী চিকিৎসকদের কথা বিশ্বাস করতে না পেরে সন্তুষ্টির জন্য মর্গে গিয়ে স্ত্রী নাড়ি পরীক্ষা করে দেখেন।
নিপত সিং রাজপুত জানিয়েছেন, স্ত্রীর বুকে হাত রাখলে তিনি অনুভব করেন তার হৃদস্পন্দন চলছে। বিষয়টি তিনি তার পরিবারের সদস্যদের জানান। এরপরই ট্রমা কেয়ার সেন্টারে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর আবার চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। জয়রোগ্য হাসপাতালের সুপারও বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ আরকেএস ঢাকদ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অবহেলাকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।