দুর্গাপুজোর পর আর কালী পুজোর সময় মানুষের মনের মতো উৎসব হলো ধনতেরাস। মনের মধ্যে থাকা ধনতেরাস আসার অপেক্ষা শুরু হয়ে গেছে এখন থেকেই । বেশিরভাগ মানুষ এই সময় সোনায় বিনিয়োগ করেন। সোনার গয়না বা সোনার কয়েন অনেকেই কিনে থাকেন এই সময়। কিন্তু সংপ্রতি সোনার বন্ড কেনা খুব বেড়ে গিয়েছে, মানুষ একটু বেশি লাভ পেতে চান এখন বিনিয়োগে। আবার ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সময় তাই এখন অনেকে আবার বিভিন্ন সংস্থা থেকে ডিজিটাল সোনাও কেনেন। তবে সোনা যারা কিনছেন তাদের এই পাঁচটি ব্যাপার অবশ্যই বুঝতে বা জানতে হবে। না হলে ঠকে যেতে হবে আপনাকে।
১। প্রথমেই যে সোনা কিনছেন , সেটা কতটা খাঁটি জানতে হবে। সোনা কতটা খাঁটি কেমন ভাবে বুঝতে হয়। যদি ২৪ ক্যারাট সোনা হয় তাহলে সেটা খাঁটি। ৯৯.৯ শতাংশ খাঁটি ২৪ ক্যারাট সোনা মানে। কিন্তু ২২ ক্যারাট সোনা দিয়েই দোকানে সাধারণত অলঙ্কার তৈরি হয়। গয়নায় যেন ২২ ক্যারাটের সোনা দেওয়া হয় দেখে নিতে হবে। ৯১.৬ শতাংশ খাঁটি ২২ ক্যারেট সোনা মানে। ৮৭ শতাংশ ২১ ক্যারাটে থাকে, ৭৫ শতাংশ ১৮ ক্যারেটে থাকে। তবে ২২ এবং ২১ ক্যারেট সোনা দিয়েই বেশি গয়না তৈরি করা হয় আমাদের দেশে।
২। খাদের পরিমাণ ধরা যায় স্পেকট্রোমিটার নামে একটি যন্ত্রে সোনা মাপার পরে। কত ক্যারাটের সোনায় গয়না বানানো হয়েছে যন্ত্রই বলে দেবে। সুতরাং, খাদ যাচাই করেই সোনা কেনা উচিত স্পেকট্রোমিটার মেশিনে মেপে।
৩। ‘ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস’ (বিআইএস) সোনার গয়না কতটা খাঁটি, তা ঠিক করে। একটি নম্বর হলমার্ক করা থাকে প্রত্যেক গয়নায়, স্বর্ণকারের পরিচয় ও স্থান, বিআইএস স্ট্যাম্প, সোনার ক্যারাট, হলমার্কের সাল— এই তথ্য থাকতেই হবে। এই ব্যাপারগুলি কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে।
৪। অনেক সময়ে ‘মেকিং চার্জ’-এর উপর বাড়তি ছাড় দেওয়ার কথা বলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বেশি পরিমাণে গয়না বিক্রির জন্য। কেনার আগে ছাড় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। কোথাও কোনও গুপ্ত খাতে বেশি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে কি না অবশ্যই জেনে নেওয়া উচিত, তা যাচাই করা দরকার। আবার বিভিন্ন দোকানে এক এক রকমের হয় একই গয়নার দাম। সোনার মান বা মেকিং চার্জ তার কারণ হতে পারে। ফলে একাধিক দোকানে গিয়ে দাম যাচাই করা উচিত কেনার আগে। ঠকার ভয় থাকে না হলে।
৫। সোনা কেনা মানেই যে ‘ভাল লগ্নি’ এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। সোনায় বিনিয়োগ করা ঠিক হচ্ছে কি না বাজার দেখে বুঝতে হয়। পাথরের কাজ সোনার গয়নায় থাকলে, তা দেখতে ভাল লাগে কিন্তু কয়েক গুণ বেড়ে যায় তার দামও। অথচ, পাথরের দাম পাওয়া যায় না পরে সেই গয়না বিক্রি করলে। ফলে, পাথর না থাকাই বেশি ভাল সোনার গয়নায়।