এক ভন্ড জ্যোতিষী যজ্ঞ করার নামে মাদক মেশানো শরবত খাইয়ে নেশায় বুদ করে আর্থিক প্রতারণা আর যৌন নিগ্রহ করলো। এই ঘটনার প্রতিবাদ করার কারণে ওই জ্যোতিষী সোশ্যাল মিডিয়ায় গৃহবধূর অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। যদিও সে ভন্ড জ্যোতিষী গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু কলকাতার মতো শহরে এরকম ঘটনা সত্যিই অবাক করা। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ওই ধৃত ভন্ড জ্যোতিষকে জেরা করেছে আর এই জেরার মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে ওই ব্যক্তির নাম সুভাষ দাস ওরফে শুভাশিস দাস ওরফে অভিষেক। বিভিন্ন জায়গায় সে নিজের বিভিন্ন নাম ব্যবহার করতো। উত্তর কলকাতায় বসবাস কারিনী এক মহিলা ওই জ্যোতিষীর নাম যৌন নিগ্রহ এবং প্রতারণার অভিযোগ এনেছে। সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, মাত্র বছর চারেক বিয়ে হয়েছে ওই মহিলার। কোনও ভাবেই কোনও সন্তান হচ্ছিলো না তার। মূলত সেই কারণেই তার সংসারে নানান অশান্তি শুরু হয়। ফলত কোনও দিকে কোনও উপায় না পেয়ে শেষে ওই সুভাষ নামের ভন্ড জ্যোতিষীর কাছে যান। সুভাষ সন্তানধারনের জন্য সেই সময় মহিলাকে কয়েকটি পাথর দেয়। তার জন্য ওই ব্যক্তি দেড় লক্ষ টাকা নেয়। এর পর সুভাষ বধূকে বলে, যজ্ঞ করতে হবে তারাপীঠে গিয়ে। কিন্তু স্বামী বা পরিবারের কেউ সেখানে উপস্থিত হলে হবে না। গত জানুয়ারি মাসে অনেকটা বাধ্য হয়েই গৃহবধূ জ্যোতিষীর সঙ্গে তারাপীঠে যান। তার জন্য ওই মহিলার কাছ থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা আলাদাভাবে নেওয়া হয়। যজ্ঞও করা হয় তারাপীঠের শ্মশানে নিয়ে গিয়ে।
অভিযোগ, ওই যজ্ঞের পর একটি হোটেলে গৃহবধূকে নিয়ে যায় সুভাষ। সেখানে মাদক মেশানো ভাঙের সরবৎ তাঁকে খাওয়ানো হয়। তারপর অচেতন হয়ে পড়েন ওই মহিলা। ওই জ্যোতিষী তার এই অচেতন অবস্থাতেই তাকে যৌন নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। নিজের মোবাইলেই সেই ছবি তুলে রাখে ওই ভন্ড জ্যোতিষী। যখন ওই মহিলার জ্ঞান ফেরে তখন তিনি নিজেই বুঝতে পারেন যে তার উপর যৌন নিগ্রহ হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কলকাতা ফেরবার পরও কাউকে কিছু বলতে পারেননি লজ্জায় ও ভয়ে। দিন কয়েক আগে ফের ওই জ্যোতিষী আবার যজ্ঞ করতে হবে বলে ডেকে পাঠায় ওই মহিলাকে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে যেতে হবে সেজন্য। এবার ওই গৃহবধূ জ্যোতিষীর ছক বুঝে ফেলেন আর তিনি যেতে রাজি হননি।
অভিযোগ, আগের হোটেলে তোলা অশ্লীল ছবি দেখিয়ে সেই সময় ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে অভিযুক্ত। সে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছবি ও ভিডিও আপলোড করে দেবে বলে হুমকি দিতে শুরু করে। এতে গৃহবধূ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তিনি চিৎপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের লোকেদের সহযোগিতায়। জানা গিয়েছে, জ্যোতিষী ভুয়ো নাম ব্যবহার করত । এমনকী, হোটেলে ঘর নেয় ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়ে। সে অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে এর আগেও একই ধরনের কুকীর্তি করেছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।