সে সময় ভারতে সিপাহী বিদ্রোহ হয়নি। ভারতে তখন চলছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন। সেই সময় জন্ম তাঁর। সময়টা ১৮৩২ সাল। সেই সময় থেকে এই পৃথিবীর ভালো মন্দের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। পার করেছেন দু দুটো বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল। দেখেছেন, রাশিয়ায় বিপ্লব পরিস্থিতি। পেরিয়েছেন আমেরিকার ঊনচল্লিশটা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এত যুগ পেরিয়ে এখনও সুস্থ সবল ইনি।
তাঁর নাম জনাথন। তিনি এক কচ্ছপ। এই অক্টোবরেই তিনি পদার্পন করেছেন ১৮৮ বছরে। দুশো বছর বয়সের দোরগোড়ায় পৌঁছনো এক শতাব্দী-প্রাচীন কচ্ছপ। এই মুহূর্তে তিনিই বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত প্রাণী।
জেনে নিন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সের কচ্ছপ জোনাথনের জীবনকাহিনী। ভারত মহাসাগরের ছোট্ট দ্বীপ স্যেচেলেস-এ জন্ম এই কচ্ছপের। মাত্র ৫০ বছর বয়সে দক্ষিণ অটলান্তিক মহাসাগরের সেন্ট হেলেনা দ্বীপে তাকে নিয়ে আসা হয়। এরপর দক্ষিণ আটলান্টিকের সেন্ট হেলেনা দ্বীপেই তিনি অধিষ্ঠান করছেন সেই ১৮৮২ সাল থেকে। এই দ্বীপ তখন ছিল ব্রিটিশদের অধীনে। এখানের গভর্নরকে উপহার স্বরূপ দেওয়া হয়েছিল জনাথনকে। ইতালির শাসক দিয়েছিলেন এই উপহার। এই দ্বীপেরই একটা চিড়িয়াখানায় সেই থেকে বসবাস তার।
এত বেশি বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে জোনাথন হারিয়ে ফেলেছে তার দৃষ্টিশক্তি। হারিয়ে ফেলেছে ঘ্রাণশক্তিও। কিন্তু সে এখনও বেশ সুস্থ আর শক্তিশালী রয়েছে। তার ডায়েটও বিশেষ ভাবে চলে। রোজ সে নিয়ম করে আপেল, গাজর, শশা, কলা, পেয়ারা ইত্যাদি খায়।
জনাথন কচ্ছপটি যেমন স্থলের উপরে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়স্ক জীবন্ত প্রানী, তেমনই সবচেয়ে বেশ নোংরাও এই প্রানীটি। কারণ, এত বছর বয়সে সে স্নান করেনি কোনওদিন। এত বছর পর এই বছর প্রথম তাকে পরিষ্কার করা হয় তাকে ইংল্যান্ডের রানীর তার সাথে দেখা করতে আসার কথা থাকায়। যদিও ভীষণ সাবধানতার সাথে মেডিকেটেড সাবান এবং নরম জালি দিয়ে খুব সর্তকতার সঙ্গে স্নান করানো হয়েছে তাকে।
প্রানীবিদরা জনা, জোনাথন মূলত যে শ্রেণীর কচ্ছপ সেই শ্রেনীর কচ্ছপগুলো আকারে বড়
এবং এদের আয়ু সাধারণত দেড়শ বছরের উপর হয়ে থাকে। সে হিসেবে জোনাথন বর্তমানে তাদের শেষ বয়স কাটাচ্ছে।