পৃথিবীর দিকে এমন এক বিরল শক্তিশালী সৌরঝড় (Solar Storm) ধেয়ে আসবে, যার ধাক্কায় রাতারাতি সারা বিশ্বের ইন্টারনেট যোগাযোগ ভেঙে পড়তে পারে। এবং তা কয়েক সপ্তাহ, এমনকী বিপর্যস্ত থাকতে পারে কয়েক মাসও। এমনই দাবি করা হয়েছে এক নতুন গবেষণায়। এর আগে ১৯২১ সালে পৃথিবী এরকম বড় সৌরঝড়ের প্রকোপে পড়েছিল। সে সময় ইন্টারনেটের অস্তিত্বই ছিল না। সে সময় সশব্দে ফেটে গিয়ে জ্বলেপুড়ে গেছিল টেলিগ্রাফের তার। ১৯২১ সালে পৃথিবীর যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তা অভূতপূর্ব, ভয়ঙ্কর সেই সৌরঝড় আছড়ে পড়ায়। তার নাম ‘ক্যারিংটন অ্যাফেক্ট’ বিজ্ঞানের পরিভাষায়। পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল সেই সৌরঝড়ের ঝাপটায়। আর অত্যন্ত বিষাক্ত সৌরকণা আর মহাজাগতিক রশ্মি তার ফাঁক দিয়ে ঢুকেছিল ।
বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের সৌরঝড়কে বলা হয়, ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)’। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে ওঠে গোটা সৌরমণ্ডলের পক্ষেই। সারাক্ষণই বিস্ফোরণ হয়ে চলেছে হিলিয়াম এবং হাইড্রোজেনে ভর্তি সূর্যে। এর জেরে সূর্যের বায়ুমণ্ডলে কখনও কখনও সৌরঝড় সৃষ্টি হয় এবং গোটা সৌরমণ্ডলে পৃথিবী সহ ছড়িয়ে যায়।
আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা এই অশনিসঙ্কেত দিয়েছে। পিয়ার রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে গবেষণাপত্রটি একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশের অপেক্ষায়। অনলাইনে মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। গবেষকরা লিখেছেন, ‘পৃথিবীর ওপর এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় বা সিএমই’র আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রতি দশকে থাকে ১ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ। পৃথিবীকে এ বার তেমনই একটি সিএমই’র ঝাপটা সইতে হতে পারে। খুব বেশি যার সম্ভাবনা।’ এক গবেষকের কথায়, ” এখনও খুব বড়সড় সৌর বিপর্যয়কে সামলানোর মতো মজবুত নয় আমাদের পরিকাঠামো। কতটা ক্ষতি এর ফলে হতে পারে, তা নিয়ে আমাদের ধারণাই নেই।”