কথায় আছে বাংলা আজ যা ভাবে , ভারত কাল তা ভাবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা সময়ে নজির গড়েছে বাংলা। কিন্তু জানেন কি বাংলার এক অনন্য নজির যা দেশে প্রথমবার হয়েছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই বাংলার বুকেই প্রথমবারের জন্য কোনো রেল স্টেশন এর নাম রাখা হয়েছিল এক মহিলার নামে। জানেন কি কোথায় এই স্টেশন?
হাওড়া বর্ধমান রুটের কর্ড লাইন। প্রথমে তাতে পরে বালি, তারপরেই আসে ডানকুনি। এর মাঝেখানে রয়েছে একটি স্টেশন জার নাম বেলানগর। পূর্ব রেলের তথ্যসূত্র জানাচ্ছে, ১৯৫৮ সালে ভারতবর্ষে প্রথম একজন মহিলার বেলা মিত্রর নামে এই স্টেশনের নাম রাখা হয়। তিনি ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং সমাজসেবকও। বেলা মিত্রের স্বামী হরিদাস মিত্রও একজন যথেষ্ট পরিচিত ব্যাক্তি। তিনি এক সময়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। বেলা মিত্রের আরও একটি পরিচয় রয়েছে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র’র মা। কিন্তু শুধুমাত্র এতেই বেলা মিত্রের পরিচিতি সীমাবদ্ধ নয়।
সুভাষ চন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করার পর ফৌজের সিক্রেট সার্ভিসের দায়িত্ব পান সুভাষ চন্দ্রের ভাইঝি বেলা বসু বা অমিতা বসু। যতদূর জানা যায় কলকাতা থেকে গোপনে রেডিও ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ ফৌজের বাহিনীকে খবর পাঠাতেন বেলা। এই সূত্রেই পরিচয় হরিদাস মিত্র’র সাথে। পরে দুজনের বিয়ে। ১৯৪৭ -এ জন্মগ্রহণ করে তাদের ছেলে অমিত মিত্র। ভারতের স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা রিফিউজিদের জন্য পশ্চিমবাংলায় ডানকুনির কাছে কাজ শুরু করেন বেলা মিত্র। তবে তিনি বেশী দিন বাঁচেননি। মাত্র ৩২ বছর বয়সে প্রাণহারান তিনি।
পূর্ব রেল তথ্যসূত্র বলে ১৯৫৮ সালে বেলা মিত্রের স্মৃতি রক্ষার্থে তৈরি হয় এই স্টেশন বেলা নগর। ১৯৬৪ সালে বিদ্যুৎ আসে। ২টি প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট এই স্টেশন এখনও যথেষ্ট চালু রয়েছে। কিন্তু এই নামের পিছনের কাহিনী জানেন না অনেকেই। এর পেছনে কোনো প্রামাণ্য নথি না থাকলেও জনশ্রুত বিষয়টি। আজকের দিনে অনেকেই এই বিষয়টি জানেন না।