রুশ প্রতিষেধক স্পুটনিক ভি ভারতে আসছে । বিশ্ববাজারে প্রথম করোনাভাইরাস প্রতিষেধক হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছিল এই প্রতিষেধকই । মস্কোয় এটি তৈরি হয়েছে। এটি তৃতীয় কোভিড প্রতিষেধক ভারতীয় বাজারে । অতিমারির সঙ্কটে টিকার ঘাটতি সামলাতেই এই প্রতিষেধক ব্যবহারে সম্মতি দেয় ড্রাগস কনট্রোলার জেনেরাল অফ ইন্ডিয়া ।
কী ভাবে কাজ করে?
অ্যাডেনোভাইরাস ভেক্টর ভ্যাক্সিন। শরীরে কমজোরি ভাইরাস ঢুকিয়ে তার সঙ্গে লড়াই করার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা তৈরি করে। যেটা শরীরে যাচ্ছে, সেটা অ্যান্টিবডি তৈরি করার মতো কার্যকরী ,ক্ষতিকারক না হলেও ।
টিকাকরণ
স্পুটনিকের তফাৎ অন্য প্রতিষেধকের সঙ্গে এই জায়াগাতেই। বাকিগুলোর মতো দুই পর্বে টিকাকরণ হলেও দুটো আলাদা স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করা হয়। এতে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা নাকি বাড়ে। দ্বিতীয় পর্বের টিকাকরণ প্রথম পর্বের ২১ দিন পর হয়।
এফিকেসি
আমেরিকার ফাইজার এবং মডার্নার পর এই প্রতিষেধকের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ এফিকেসি— ৯১.৬ শতাংশ। এখনও গবেষণার তৃতীয় পর্বে রয়েছে ভারতীয় প্রস্তুতকারীরা । মস্কোর প্রস্তুতকারীরা দাবি করেছে, এই প্রতিষেধক ব্রিটেন স্ট্রেনে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ।
খরচ
প্রস্তুতকারীরা বিশ্বজুড়ে ১০ ডলার মানে ৭৫০ টাকার দাম রেখেছে । তবে ঠিক কতটা খরচ পড়বে ভারতে, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়।
কী ভাবে রাখবেন
এই প্রতিষেধক ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখা যায় । তাই দেশের দুর্গম জায়গায় পৌঁছনো সুবিধে।
ভারতীয় প্রস্তুতকারী কারা
রাসিয়া ৫টি ওষুধের সংস্থার সঙ্গে ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ভারতে হাত মিলিয়েছে । গ্ল্যান্ড ফার্মা, হেটেরো বায়োফার্মা, প্যানাসিয়া বায়োটেক, স্টেলিস বায়োফার্মা এবং ভিরচো বায়োটেকের সঙ্গে। এই পাঁচ সংস্থার মাধ্যমে বছরে ৮৫ কোটির কাছাকাছি প্রতিষেধক তৈরি হবে ।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
দাবি করেছেন রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ০.১ শতাংশ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে এই প্রতিষেধক থেকে।
বিতর্ক
এই প্রতিষেধক বাজারে যথেষ্ট গবেষণা না করে সময়ের আগে আনা হয়েছিল বলে প্রথমে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছিল স্পুটনিক ভি নিয়ে। তবে ল্যানসেট পত্রিকা এই প্রতিষেধক নিরাপদ প্রকাশ করার পর সেই ভীতি কিছু হলেও কমেছে। ইরান, ভিয়েতনাম, ক্যামেরুন, গাজার মতো ৬০ টি দেশে স্বীকৃতি পেয়েছে এই প্রতিষেধক। তবে ব্রাজিল, স্লোভাকিয়ার মতো বেশ কিছু দেশ থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে স্পুটনিক ভি স্বীকৃত হয়নি । লেভাডা সেন্টারের সমীক্ষা অনুযায়ী, বহু মানুষই এই প্রতিষেধক নিতে অনিচ্ছুক রুশে ।