স্বামীর সাথে স্ত্রীর সহমরণের কথা হয়ত শুনেছেন অনেকেই। সেচ্ছায় নয় বরং স্বামীর মৃত্যুর পর রীতিমত জোর করেই স্ত্রীকে স্বামীর চিতায় একসঙ্গে সহমরণে যেতে বাধ্য করা হত। পরবর্তীকালে রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগে বন্ধ হয় এই কুপ্রথা। কিন্তু এইবার সামনে এল এমন একটি ঘটনা যা সেই সহমরণের ঘটনার স্মৃতি মনে করায়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে স্ত্রীর সাথে পরপারের যাত্রায় যেতে চেয়ে মৃত স্ত্রীর জ্বলন্ত চিতায় ঝাঁপ দিলেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার ওড়িশার কালাহান্ডিতে।
সহমরনের স্মৃতি মনে করলেও কিছুটা ফারাক রয়েছে অবশ্যই। এক্ষেত্রে স্ত্রীর চিতায় ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে একেবারে স্ব-ইচ্ছায়। আসলে দীর্ঘ দাম্পত্যের পথ চলা সহধর্মিণী যে তাকে একলা করে চলে যাচ্ছে তা মেনে নিতে চাননি একেবারেই। সেকারণেই হয়তো স্ত্রীর সঙ্গেই পরপারে যেতে চেয়েছিলেন স্বামী। আর সেই কাহিনী এখন মুখে মুখে ফিরছে ওড়িশার কালাহান্ডিতে।
জাতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রায়বতী সবর নামের ওড়িশার কালাহান্ডির গোলামুন্ডা ব্লকের এক বাসিন্দা, ৫৭ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এদিকে স্ত্রীর এমন ভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিক মৃত্যু একেবারেই মেনে নিতে পারেননি ৬০ বছর বয়সী তার স্বামী নীলমনি সবর। তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য। কালাহান্ডির এসপি বিবেক সারভানা জানান, মঙ্গলবার ওই মহিলা হৃদরোগে মারা যান। তাঁর স্বামী এবং চার সন্তান ও আত্মীয় স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গ্রামের শ্মশানে যান শেষকৃত্যের জন্যে। এরপর শ্মশানের আচার, রীতি পালনের পর তার স্ত্রীর দেহ চিতায় তুলে তাতে অগ্নি সংযোগ করা হয়। চিতা জ্বলতে শুরু করলে শ্মশান থেকে এক এক করে যখন সকলে বাড়ির পথ ধরছেন সেই সময়ে হঠাৎই স্ত্রীকে চিরদিনের মতো হারিয়ে শোকে পাথর স্বামী নীলমনি ছুটে গিয়ে চিতায় ঝাঁপ দেন। আত্মীয়রা তাকে ছুটে এসে নামানোর আগেই তিনি বেশ কিছুটা পুড়ে যান। এসপি জানিয়েছেন, জ্বলন্ত চিতায় এই ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার ফলে মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার চিকিৎসা চলছে।