সংসারে আর্থিক অনটন থাকায় স্বামীর নির্দেশেই স্ত্রী পরিচারিকার কাজ শুরু করেন। কিন্তু কাজে বেরতেই স্ত্রীকে সন্দেহ করতে শুরু করে স্বামী। স্ত্রী অন্য কোন সম্পর্কে জড়িয়েছে সন্দেহে অত্যাচারও করত স্বামী। ঘরে আটকে রেখে জল পর্যন্ত না দিয়ে স্ত্রীর উপর পাশবিক অত্যাচার করে সে। ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর (Baruipur) থানার উত্তরভাগ দক্ষিণ পাড়ার। মহিলার বাপেরবাড়ির লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করেন। গৃহবধূর শারীরিক অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক।
মথুরাপুরের বাসিন্দা ওই মহিলার সঙ্গে প্রায় চোদ্দ বছর আগে বারুইপুর উত্তর ভাগের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা আশিস প্রামাণিকের সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। তাঁদের একটি কন্যাসন্তানও আছে। আশিস প্রামাণিক কলের মিস্ত্রি। তবে একার আয়ে সংসার চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। তাই স্বামীর কথামতো পরিচারিকার কাজ শুরু করেন গৃহবধূ। কিন্তু বাড়িতে ফিরতে দেরি হলে কিংবা কোন পুরুষের সাথে কথা বললে স্ত্রীকে সন্দেহ করত আশিস। কাজের সুবিধায় ওই মহিলা একটি মোবাইল ফোন কিনেছিলেন। আর তারপরই সন্দেহ আরও বাড়তে পারে। প্রায়শই তা নিয়ে অশান্তি হত। বৃহস্পতিবার রাতে তা প্রবল আকার নেয়। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীকে শাবল, লাঠি এমনকি মাছ ধরার বর্শা দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে সে। এমনকী বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে আটকে রাখে স্ত্রীকে। একফোঁটা তেষ্টার জলও দেওয়া হয়নি গৃহবধূকে।
প্রতিবেশীদের মাধ্যমে গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন খবর পায়। বাবা মহাদেব হালদার ও দাদা মোহন হালদার শুক্রবার সকালে বোনের শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। এসে দেখেন তখনও বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে মহিলাকে আটকে রাখা হয়েছে। এমনকি তাঁকে জল পর্যন্ত খেতে দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে শ্বশুর ও শ্যালককেও মারধর করার হুমকি দেয় মহিলার স্বামী। অবশেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে বারুইপুর থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন। তারা গৃহবধূর স্বামীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলা বর্তমানে বারুইপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তদন্ত শুরু করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ।