করোনা আবহে হয়নি উচ্চমাধ্যমিক। বিকল্প পদ্ধতিতে হয়েছে এই বছরের নম্বর গণনা। কিন্তু সেই নম্বর গণনা পদ্ধতি ঘিরে সরষের ভেতরেই কি ভূত? পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর রিভিউতে বেনজিরভাবে ১০৮ নম্বর বেড়ে গেল এক ছাত্রীর। আগে ছিল ২৩৮, হল ৩৪৬। পরীক্ষার্থী তার প্রাপ্য নম্বর পেয়েছে, এমনটাই জানাচ্ছেন সংসদ সভাপতি। তবে প্রথমেই সে তার প্রাপ্য নম্বর পেলে তাকে কম সমস্যায় পড়তে হত, আক্ষেপ পড়ুয়ার।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রিভিউতে কতই বা নম্বর বাড়ে? হয়তো ১০, খুব বেশি হলে ১৫। কিন্তু এই ক্ষেত্রে এক ছাত্রীর বেড়েছে একটি মার্কশিট অনুযায়ী ১০৮ নম্বর। রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা কার্যত আগে হয়নি। ওই ছাত্রীর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ২৩৮। রিভিউর করার পরে তা বেড়ে হল ৩৪৬। অর্থাৎ এক ধাক্কায় নম্বর বাড়ল উচ্চমাধ্যমিক মার্কশিটে।
গত ২২ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের ফল। ফল প্রকাশের শুরুর থেকেই পাশ, ফেল, প্রাপ্ত নম্বর ইত্যাদি নিয়ে সমস্যা লেগেই থাকে। হয়েছে প্রচুর বিতর্ক। জেলায় জেলায় নানা স্কুলে প্রতিবাদ শুরু করে ফেল করা পড়ুয়ারা। অবরোধ থেকে স্কুলে ভাঙচুর, বাদ যায়নি কিছুই।
ছাত্র বিক্ষোভের এই ঘটনায় প্রভাবিত হয় শিক্ষামন্ত্রী থেকে সংসদ পর্যন্ত। এই সমস্ত অশান্তির কারণে হঠাৎই সবাইকে পাস করানোর সিদ্ধান্ত নেয় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সেই প্রেক্ষিতেই এই রিভিউয়ে হঠাৎ এতো নম্বর বৃদ্ধি তুলেছে প্রশ্ন! তাহলে কি বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নে রয়েছে বিশাল মাপের গলদ। কতোটা ঠিক এই রাজ্যের ছাত্র ছাত্রীদের প্রাপ্ত নম্বর! উঠছে প্রশ্ন। শুক্রবার হাতে নতুন মার্কশিট পেয়ে নিজের প্রাপ্ত নম্বর দেখে হতবাক কেষ্টপুর দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যালমন্দিরের ছাত্রীর। এই প্রেক্ষিতে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নম্বর ফর্মুলাকেই দায়ী করছে শিক্ষকদের একাংশ। সি গ্রেড নম্বর পাল্টে হয়ে গেছে বি প্লাস। ৪৮ শতাংশ থেকে নম্বর দাড়িয়েছে ৬৯ শতাংশে।
আবার, আজই এই বছরে কলেজে ভর্তির আববেদন করার শেষ দিন। নম্বর বাড়ার আনন্দ হলেও আক্ষেপ ছাত্রীর গলায়। রাজারহাটের এই ছাত্রী জানাচ্ছেন আগেই তার পাওয়া নম্বর। তিনি বলেছেন, এটা আগে হলে আমার সমস্যা কম হত, কলেজে আগের মার্কশিট দিয়ে আবেদন করেছি। নিজেদের নম্বর দেওয়ার ভুলের কথা মেনে নিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদ সভাপতি স্বীকার করেছেন, রিভিউতে বেড়ে যাওয়া ওই নম্বর ওই ছাত্রীর প্রাপ্য ছিল।