ভারতীয় প্রাক্তন অফ স্পিনার হরভজন সিং সোমবার তার করা একটি বিতর্কিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। পোস্টটি তে দেখা যায় তিনি পাঞ্জাবিতে একটি পোস্টার শেয়ার করেছিলেন যা বিতর্কিত খালিস্তানি জঙ্গি নেতা জারনাইল সিং ভিন্দ্রনওয়ালে এবং অপারেশন ব্লু স্টারের সময় স্বর্ণ মন্দিরের ভিতরে অন্যান্য জঙ্গিদের শহীদ হিসাবে শ্রদ্ধা জানায়। আর এই পোস্ট ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। জাতীয় দলের ক্রিকেটার কি করে এমন একজন জঙ্গি নেতার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শহীদের সন্মান দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তা ঘিরে উঠেছে প্রশ্ন।
কে এই জারনাইল সিং ভিন্দ্রনওয়ালে?
জারনাইল সিং ভিন্দ্রনওয়ালে, (পূর্বের নাম জারনাইল সিং), পাঞ্জাবের রোডি তে ১৯৪৪ সালে তার জন্ম হয়। ভারত থেকে আলাদা হয়ে পৃথক খালিস্তান রাষ্ট্র তৈরির পরিকল্পনায় শিখ সম্প্রদায়ের সহিংস আন্দোলন কে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই জারনাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে।
তার নেতৃত্বে অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দির চত্বরে চলতে থাকে অবাধ জঙ্গি কাজকর্ম। স্বর্ণ মন্দিরে পুলিশের ঢোকা বারণ ছিল। তাই এই স্বর্ণ মন্দিরকেই জঙ্গিরা তাদের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেয়। তারা তলোয়ারের পাশাপাশি বহু আগ্নেয়াস্ত্রও মজুত করে। জারনাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের নেতৃত্বে ক্রমশ পাঞ্জাবে বিভিন্ন সরকারি জায়গায় চলে খুন এবং লুঠপাট। পাঞ্জাবে আইন-শৃঙ্খলার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। এই আন্দোলনকে নাম দেওয়া হয় ‘খালিস্তান মুভমেন্ট’। এই আন্দোলন দমন করতে ১৯৮৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বর্ণ মন্দিরে অপারেশন ব্লু স্টার চালান। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে নিহত হন জারনাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে।
এহেন ভিন্ডারওয়ালেকে শহীদ বলার পর চারিদিকে হরভজন সিংহের তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। হরভজন যদিও টুইটারে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি লিখেছেন , ‘আমি গতকালের একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টের জন্য ক্ষমা চাইছি। এটি একটি হোয়াটসঅ্যাপ ফরোয়ার্ড ম্যাসেজ ছিল, আমি সেই ভাবে দেখিও নি পোষ্টটি তে কি ছিল। তাড়াহুড়োয় শেয়ার করে দি। আমি নিজের ভুল স্বীকার করছি।”
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি নিজে একজন শিখ। আমি ভারতের হয়ে লড়াই করি। আমি কোনোদিনও ভারতের বিরুদ্ধে ছিলাম না। এই দেশের ভাবাবেগে আহত করার জন্য আমি ক্ষমাপার্থী। আমি কোনও দেশ বিরোধী সংগঠনকে সমর্থন করিনা আর কোনোদিন করবও না। আমি ২০ বছর ধরে এই দেশের জন্য নিজের রক্ত-ঘাম ঝড়িয়েছি আর কখনও ভারতের বিপক্ষের কার্যকলাপ সমর্থন করিনি।”