৯/১১ এর ঘটনার পরে আফগানিস্তানে ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয় তালিবান জঙ্গি সংগঠন। সেই থেকে আফগানিস্তানে (Afghanistan) মোতায়েন ছিল আমেরিকান সেনা। দীর্ঘ সময় পর আফগানিস্তানের জমি থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States of America)। আর তারপরেই সশস্ত্র গোষ্ঠী তালিবান সেই দেশের ৮৫ শতাংশ জায়গা দখলে নেওয়ার দাবি করেছে । মার্কিন ও ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহার চলার মধ্যেই এমন কথা জানিয়েছে তারা। মস্কোয় তালিবানদের (Taliban) প্রতিনিধি দল এক বিবৃতি দিয়েছে যে তারা আফগানিস্তানের মোট ৩৯৮টি জেলার মধ্যে ২৫০টি জেলাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। যদিও এমন দাবিকে ভুয়ো বলে অ্যাখা দিয়েছে আফগান প্রশাসন। কিন্তু সম্প্রতি বিবিসি (BBC) অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের অর্ধেক এলাকা এখন তালিবানের নিয়ন্ত্রণে।
বিবিসি অনলাইনের এক আফগান সার্ভিসের গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে
বলা হচ্ছে গজনি, মাইদান ওয়ার্দাকসহ আফগানিস্তানজুড়ে এখন নিজেদের উপস্থিতি পুরোপুরি স্পষ্ট করছে তালিবান সশস্ত্র গোষ্ঠী। এ ছাড়াও কুন্দুজ, হেরাত, কান্দাহার ও লস্কর গাহসহ আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আফগানি শহরের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে তালিবান। যদিও এটা হঠাৎ করে রাতারাতি হয়নি। ২০১৭ সালে করা বিবিসির এক সার্ভেতে উঠে আসে তালিবান সংগঠন নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা যায় আফগানিস্তানে বেশ কয়েকটি জেলা তালিবানের নিয়ন্ত্রণে।পাশাপাশি আরও দেখা যায় আফগানিস্তানের আরও অনেক এলাকায় ২০১৭ সালের আগেই যথেষ্ট সক্রিয় ছিল তালিবান গোষ্ঠী। অথএব তারা যে একদিনেই স্বমহিমায় ফেরেনি তা সুস্পষ্ট। বহুদিন ধরেই ধীরে ধীরে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে তারা।
এখন অবশ্য চিত্র সম্পূর্ন ভাবে পাল্টে গিয়েছে। এখন তালিবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের নতুন নতুন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। কোনো কোনো জায়গা থেকে তালিবানের আগ্রাসনের মুখে আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনী পালিয়েছে। কোনো কোনো এলাকা সরকারি বাহিনী ছাড়তেও বাধ্য হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় আফগানিস্তানের সাথে তালিবানের এখনো লড়াই চলছে। আফগানিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সব বড় আফগান শহরে সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে। তালিবান আগ্রাসন ঠেকাতে এক মাসব্যাপী জারি করা হয়েছে নৈশ কারফিউ। তালেবানের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর দেশটিতে বেড়েছে অশান্তি। বেড়েছে মৃত্যুও। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে মারা গিয়েছেন বহু মানুষ, বাস্তুহারাও হয়েছেন অনেকে।