ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়িতে পড়াতে এসে সেই বাড়ীরই টাকা পয়সা, সোনা দানা চুরির অভিযোগ উঠল এক গৃহ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে রোজই প্রায় পড়াতে এসেই ছাত্রীকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলতেন তিনি। কখনও অছিলা পোশাক পাল্টানোর, কখনও বা অন্য নানা ধরনের কারণ দেখাতেন। আদতে ছাত্রীকে ঘরের বাইরে বার করে চলত দফায় দফায় আলমারি খুলে চুরি। এই ভাবেই দিনের পর দিন ছাত্রীর বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকা, সোনার গয়না ইত্যাদি সরিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের শাঁখারিবাজার এলাকায়। ঘটনার কারণে পুলিশ গ্রেফতার করল গৃহশিক্ষিকাকে।
সূত্র অনুযায়ী, অভিযুক্ত গৃহ শিক্ষিকা প্রার্থনা কোলে হুগলির পুরশুড়ার বাসিন্দা। দেড় বছর আগে বিষ্ণুপুর শহরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে কাজে জয়েন করেন তিনি। স্কুলের চাকরির কারণেই তিনি আসেন বিষ্ণুপুরের শাঁখারিবাজার এলাকায়। সেখানে তিনি ছিন্নমস্তা, দলমাদল রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতেন। জানা যায় ওই বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীরই গৃহশিক্ষিকা হিসেবে প্রায় তিন মাস আগে নিযুক্ত হন তিনি।
ওই ছাত্রীর মা পাপিয়া পাল বলেন, প্রার্থনা কোলে নামের শিক্ষিকা রোজ দুপুরে মেয়েকে বাড়িতে পড়াতে আসতেন। কিন্তু প্রায় রোজই ড্রেস চেঞ্জ করবো বা ইত্যাদি নানা অজুহাত দিয়ে মেয়েকে ১০-১৫ মিনিটের জন্য ঘরের বাইরে অপেক্ষা করতে বলতেন। এমন হতে থাকে প্রায় রোজই দুপুরে। গৃহ শিক্ষিকার পড়াতে এসে এইভাবে নানা অছিলায় মেয়েকে ঘরের বাইরে বের করে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করার বিষয়টি শুরুর দিকে সেই ভাবে গুরুত্ব না দিলেও পরে তার সন্দেহ হয়। কিন্তু সেই ঘরের আলমারি খুলে থ হয়ে যান তিনি। ছাত্রীর মা দেখেন ওই ঘরে থাকা আলমারির ভেতরের ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা কাশ আর নেই, তার হাতের সোনার নোয়া বাঁধানো আর ছেলের গলার চেনও খোয়া গিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সেনাবাহিনীতে কর্মরত পাপিয়া দেবীর স্বামী বাড়ি এলে দুজনে হাতেনাতে চুরি করতে ধরেন শিক্ষিকা কে। বিষয়টি নিয়ে বিষ্ণুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের। দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার শিক্ষিকাকে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
এইদিকে প্রার্থনা কোলের নামক ওই শিক্ষিকার গ্রেফতারের খবর জানতে পেয়েই বিষ্ণুপুরে এসেছেন ওই গৃহশিক্ষিকার পরিবারের লোকজন। কাকা স্বপন কুমার কোলে বলেন, ‘বিশ্বভারতীতে পড়াশুনা করা আমার ভাইঝি যে এই ধরণের কাজ করতে পারে বিশ্বাস করতে পারছি না।’ তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এমন খবর পেয়েই তাঁরা থানায় ছুটে আসেন বলে জানান। শেষ খবর পাওয়া অবধি গৃহশিক্ষিকা প্রার্থনা কোলেকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে।