Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

যেভাবে এক মুচির হাতেই জন্ম নেয় বিশ্ব বিখ্যাত জুতোর ব্র্যান্ড ‘বাটা’! জানুন কাহিনী

হাঁটা মানেই বাটা। সারা পৃথিবী খ্যাত জুতোর নামকরা ব্র্যান্ড বাটা। এর প্রধান কার্যালয় সুইজারল্যান্ডের লুসানে অবস্থিত। ৫০টিরও অধিক দেশে বাটা কোম্পানির শাখা রয়েছে। ২৬টি দেশে বাটার জুতা তৈরির কারখানা রয়েছে। এছাড়াও কলকাতার কাছাকাছি বাটানগরের নামই হয়েছে বাটা কোম্পানির নামে। কিন্তু জানেন কি এই বিশ্ব বিখ্যাত জুতোর ব্র্যান্ড বাটার সৃষ্টি হয়েছে এক মুচির হাত ধরে।

অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের জলিন (Zlín) শহরে (বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র) এক মুচির পরিবারে জন্মেছিলেন টমাস বাটা। তার ছিল দুই ভাই আর এক বোন। তার পরিবার জুতো সেলাই এর কাজে নিযুক্ত ছিল। ছোটবেলা থেকেই বাবার থেকে দেখে দেখে জুতোসেলাই এ রপ্ত হয়ে গেছিলেন টমাস বাটা। শুধু যে দক্ষভাবে জুতো সেলাই করতে পারতেন তাই নয় তার মাথায় আসতো নিত্যনতুন নানান ডিজাইনের জুতা বানানোর আইডিয়া। একঘেয়ে জাতীয় জুতো ছেড়ে তিনি চাইতেন অন্যরকম কিছু জুতো তৈরি করতে। আর তাই তৈরি করলেন নিজের জুতা বানানোর কোম্পানি বাটা। অস্ট্রো হাঙ্গারি সাম্রাজ্যের জলিন শহরে ১৮৯৪ সালের ২৪ অগস্ট ছোট একটা কারখানা তৈরি করেন টমাস সাহেব। সাথে ছিল তাঁর ভাই এন্তোনিন ও বোন এনা। কারখানার নাম রাখা হয়েছিল ‘টি এন্ড এ বাটা’।

কারখানা প্রতিষ্ঠা হলেও প্রথমদিকে কর্মচারী রাখার সামর্থ্য ছিল না। নিজেই জুতো সেলাই করতেন টমাস সাহেব। উৎপাদন অল্প, তবে জুতো বেশ টেকসই। বাড়তে থাকল চাহিদা, ছড়ালো নাম। আস্তে আস্তে কারিগর জুটতে থাকলো জুতা সেলাই শেখার। কারিগর বাড়তেই বাড়তে থাকলো উৎপাদন। সাথে সাথে বিক্রীও। বিক্রিবাটা ভালই হত। কিন্তু বেশিদিন ভালো সময় থাকলো না। ১৮৯৫ সালেই টমাস সাহেবের ভাই এন্তোনিও চাকরি নিয়ে চলে গেলে আর বিয়ে হয়ে যায় বোন এনার। টমাস সাহেব একা হলেও উৎসাহ হারালেন না। কীভাবে টি এন্ড এ বাটার ব্যাবসায় আবারও লাভ আনা যায় চিন্তা করতে লাগলেন সেই বিষয়ে। ১৯০৪ সাল নাগাদ নতুন নতুন জুতোর আইডিয়া পেতে ঘুরতে লাগলেন পশ্চিমের নানা দেশে। কম সময়ে বেশি জুতোর উৎপাদন করতে শিখে ফেললেন মেশিনে জুতো তৈরির পদ্ধতি। আইডিয়া লাগলেন নিজের কোম্পানিতে। নতুন ধরনের জুতো বানিয়ে কম দামে বাজারে বিক্রী শুরু করলেন। দ্রুত কোম্পানির নাম ছড়িয়ে পড়ল।

আর এই নাম ডাকই ভাগ্য ফিরিয়ে দিল কোম্পানির। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সেনাবাহিনীর জন্য জুতো বানানোর অর্ডার পেল বাটা। আরো নাম ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। বড় কোম্পানি হয়ে উঠল বাটা।

বাংলায় বাটানগর:

বাটা কোম্পানি বিশ্বের বহু দেশের মত ভারতেও ব্যাবসা বিস্তার। পশ্চিমবঙ্গের বাটানগরে তৈরী হয় বাটা জুতোর কারখানা। বাটা কোম্পানিকে ঘিরেই সমৃদ্ধ হয়েছিল বাটানগর। কর্মসংস্থান হয়েছিল অনেকের। বাটা জুতোর কোম্পানিকে ঘিরে আস্ত শহর তৈরী উঠেছিল। স্কুল, খেলার মাঠ, সিনেমা হল, ক্লাব, আরো কত কী তৈরী হয়েছিল সেখানে। আজ আগের মত রমরমা না থাকলেও বাটানগর ঘিরে আজও অনেক নস্টালজিয়া।

বাটার জনপ্রিয়তা আজও একইরকম আছে। পৃথিবীর পঞ্চাশটিরও বেশি দেশে বাট৷ কোম্পানির শাখা। শুধু সারা পৃথিবীর নয়, বাঙালিরও অন্যতম ভরসা বাটার জুতো।

Related posts

১ বছর কোনো যৌন সংসর্গে নেই, তাও প্রেগন্যান্ট! পরে প্রকাশিত হল আসল তথ্য

News Desk

হুহু করে বাড়ছে সংক্রমণ, দেশে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় দুই লাখ! বুস্টার ডোজ কি রুখতে পারবে তৃতীয় ঢেউ?

News Desk

১০ বছর ধরে খই মুড়ি খেয়ে দিন গুজরান, শান্তিপুরের অত্যন্ত মেধাবী বিজ্ঞান শিক্ষকের করুণ অবস্থা

News Desk