তাকে জমি-বাড়ি একসাথে লিখে দিতে হবে । নিজের ঠাকুমার কাছে এমনই দাবী করেছে নাতি এবং শুধু তাই নয় এর জন্য মারধর করেছে। এখানেই থেমে থাকেনি সে, বাড়ি থেকে বের করেও দিয়েছে ঠাকুমা কে। অথচ ওই বৃদ্ধা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনও লাভ পাননি। তাই তার ঠাই হয়েছে শেষে বৃদ্ধাশ্রম। এই ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার অভিযোগ উঠছে নদিয়ার রানাঘাটের শ্যামনগর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, বাসনা সরকার নির্যাতিতা বৃদ্ধার নাম। তাঁর নাতি সন্দীপ সরকার ও নাতবৌ সম্পত্তি লিখে দেওয়ার দাবিতে মারধর করে রানাঘাটের শ্যামনগর এলাকার বাসিন্দা বাসনা সরকারকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। বর্তমানে মেয়ের বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা রানাঘাট এলাকাতেই। কিন্তু নাতি অশান্তি করছে বলে অভিযোগ সেখানে গিয়েও। ঘটনায় শ্বাশুড়িকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্ষুব্ধ জামাই। গোটা ঘটনায় এখন প্রশাসনের কাছেই সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন অসহায় বৃদ্ধা।
বৃদ্ধা জানান, প্রায় ১০ বছর হল তাঁর স্বামী মারা গিয়েছে। তাঁর উপর তারপর থেকেই অত্যাচার করে নাতি সন্দীপ এবং নাতবৌ। মূলত, বাসনাদেবীর নামে তাঁরা যে বাড়িটিতে থাকেন সেটি। এছাড়া কিছু জমিজমা রয়েছে তাঁর স্বামীর। সন্দীপ তার নামে সেই সমস্ত সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্যই ঠাকুমাকে চাপ দেয়। কিন্তু বাসনাদেবী কেবল নাতির নামে সম্পত্তি লিখে দিতে নারাজ ছেলে-মেয়ে সহ পরিবারের সকলকে বঞ্চিত করে। সেজন্যই তিনি বৃদ্ধ বয়সে এসে নাতি ও নাতবৌয়ের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন।
বাসনাদেবীকে মারধর করে দিন কয়েক আগেই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় সন্দীপ ও তার স্ত্রী। সস্ত্রীক সন্দীপ বাসনাদেবীর ছেলেরা বাধা দিলে তাঁদেরও মারধর করে বলে অভিযোগ। জামাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি বাধ্য হয়ে স্বামীর ভিটে ছেড়ে। যদিও ওই নাতি তাঁর বার্ধক্য-ভাতার টাকা থেকে শুরু করে রেশনসামগ্রীও নেয়। ইতিমধ্যে রানাঘাট থানায় গোটা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন বৃদ্ধা। কিন্তু অভিযোগ প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে। এদিকে, ক্ষান্ত হয়নি নাতি ঠাকুমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়েও। তাঁর জামাইয়ের বাড়িতেও চড়াও হয়েছে সে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার দাবিতে। বাসনাদেবীর জামাই সীমান্ত রায় বলেন, ‘ সন্দীপ এখানেও এসেও ঝামেলা করে শ্বাশুড়ি এখানে থাকে বলে। সকলের সামনে মারধর করে আমার শ্যালককেও। হুমকিও দিয়েছে বাড়িতে ফিরলে কোপাবে বলে। রোজ ভাল লাগে না এই সমস্যা। তাই আমি বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসতে চাই শ্বাশুড়িকে।’
বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে নিজের ভিটে থাকতেও ভেবে কার্যত ভেঙে পড়েছেন বাসনাদেবী। এখন বৃদ্ধার একটাই আর্জি, ‘ সব ঠিক করে যেভাবে হোক আমাকে আমার বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’ এবার অসহায় বৃদ্ধার পাশে প্রশাসন দাঁড়ায় কিনা সেটাই দেখার!