বাঁধ ভেঙে রাস্তা-ঘাট এখন পুকুর হয়ে গিয়েছে।টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন গোটা এলাকা। যে রাস্তা দিয়ে আগে গাড়ি চলত, এখান সেখানেই নৌকা চালাচ্ছেন এলাকবাসীরা। তাই বলে তো আর বিয়ে আটকায় না। তাই নৌকায় চেপেই বিয়ে করতে গেল বর। রবিবার এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল হুগলির খানাকুলের হীরাপুর-শাবলসিংহপুর এলাকা।
জানা গিয়েছে, এদিন খানাকুলের হীরাপুরের বাসিন্দা খন্দকার আমিরুল হকের সঙ্গে বিয়ে স্থির হয় শাবলসিংহপুর এলাকার এক পাত্রীর। দুজনের বাড়ির মধ্যেকার দূরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। বাসেই যাওয়া যায়। কিন্তু টানা বৃষ্টি ও রূপনারায়ণ নদের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় সমগ্র খানাকুল এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে হীরাপুর-শাবলসিংহপুরের যে রাস্তাটি বাস-গাড়িতে যাওয়া যায়, সেটি এখন নদীর আকার ধারণ করেছে। তাই নৌকায় চেপেই সেই সড়ক-নদী পার করে বিয়ে করতে গেলেনআমিরুল। এদিন হীরাপুর থেকে জনা দশেক বন্ধু নিয়ে একটা নৌকায় করে বিয়ে করতে রওনা হন বর খন্দকারআমিরুল হক। তবে সরাসরি শাবলসিংহপুর যাচ্ছেন না তাঁরা। রাজহাটি পর্যন্ত যাচ্ছেন। রাস্তা নদীর আকার নেওয়ায় গাড়ি পাঠাতে পারেনি পাত্রীপক্ষ। তাই রাজহাটিতে আলাদা নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করেন তাঁরা।
পাত্রীপক্ষের সেই নৌকায় চেপেইআমিরুল যাবেন বিয়ে করতে। এবিষয়ে বরের দাদা বলেন, বরযাত্রী আসার কথা ছিল ৫০ জনের। কিন্তু এই অবস্থায় ১০ জনের বেশি আনা সম্ভব হল না। তবে যাঁরা বরের সঙ্গে এসেছেন তাঁরা এক নয়া অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন বলে জানিয়েছেন।
প্রতি বছরই বর্ষাকালে বানভাসী হয় আরামবাগ মহকুমা। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তার উপর শনিবার রাতে খানাকুলের ধান্যগড়ি এলাকায় রূপনারায়ণ নদের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন খানাকুলের বাসিন্দারা। যাতায়াতের মূল সড়ক নদীর আকার ধারণ করেছে। তাই এখন নৌকাই ভরসা এলাকাবাসীর। যদিও সমস্যা সমাধানের তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন। রবিবারই জেলা পরিষদের একটি টিম খানাকুলে পরিদর্শনে গিয়েছেন। ইতিমধ্যে বানভাসী এলাকাবাসীকে সাহায্যের জন্য হেলিকপ্টারে ত্রাণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন খানাকুল বিধানসভার পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী নজবুল করিম। গোটা বিষয়টি নজরে রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।