বর্তমানে দেশে বেকারত্বের সমস্যা ক্রমশঃই প্রকট হচ্ছে। তার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে চাকরীর নামে প্রতারণার চক্র। যার ফাঁদে পড়ছে বহু বেকার যুবক যুবতী। দিল্লি পুলিশের রোহিনী অঞ্চলের টিম একটি এমনই প্রতারক গ্যাং -এর সম্প্রতি পর্দা ফাঁস করেছে যারা অনলাইন ইন্টারভিউ নিয়ে জাল জয়েনিং এর চিঠি দিয়ে প্রতারণা করত। রোহিণীতে বসবাসকারী যতীন পাল নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এই ব্যবস্থা নিয়েছে।
অভিযোগকারী জানান, গত ৫ এপ্রিল তার কাছে চাকরির জন্য ফোন আসে। টেলিফোনে ইন্টারভিউ নেওয়ার কথা ছিল। যিনি ফোন করেছিলেন সেই ব্যাক্তি যতীনকে জানান যে তার প্রোফাইল শর্টলিস্ট করা হয়েছে। দুটি অনলাইন ইন্টারভিউয়ের পরে একটি MCQ পরীক্ষা হবে। যার পরে গুগল মিট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে টেলিফোনিক ইন্টারভিউ নেওয়া হয় ক্যান্ডিডেটের। অভিযোগকারী যতীন পাল কে চাকরির জইনিং লেটার (Joining Letter) ও দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী বলেছেন যে সেই সংস্থার তরফে এরপরেই তার কাছে সিকিউরিটি মানি স্বরূপ ১৭,৭০০ টাকা দাবি করা হয়েছিল। চাকরিতে যোগদানের পর এই টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে প্রতারকদের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয়। টাকা জমা দেওয়ার পর তাদের কল আসা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকদিন পর মোবাইলটি নম্বর টিও বন্ধ হয়ে যায়। এরপরেই পুলিশের কাছে পৌঁছন ভুক্তভুগী। বিষয়টি সমাধানের জন্য রোহিণী জেলার সাগর থানার এসএইচও অজয় দালালের তত্ত্বাবধানে একটি দল গঠন করা হয়। এই দলে ছিলেন এসআই বিজেন্দ্র কাদিয়ান, শিপ্রা সিং, হেড কনস্টেবল মোহিত প্রমুখ। প্রযুক্তিগত নজরদারি এবং পুলিশের বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই আয়ুষ রাজপুত ও সিদ্ধার্থ নামে অভিযুক্ত দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানিয়েছেন যে তারা চাকরির প্রস্তাব দেওয়া জব ওয়েবসাইট থেকে নানা চাকরিপ্রার্থীর ডেটা কিনে নিত। তারপর গুগল মিটের মাধ্যমে ফোনে টেলি-ইন্টারভিউ নেওয়ার পরে, জাল নিয়োগপত্রও পাঠানো হতো। এ পর্যন্ত শত শত মানুষকে প্রতারণার শিকারে পরিণত করেছে এরা। পুলিশ তাদের কাছ থেকে তিনটি ল্যাপটপ, নয়টি মোবাইল ফোন, দুটি ওয়াইফাই রাউটার, প্রায় ৫০,০০০ টাকা নগদ এবং ২৩টি ডেবিট কার্ড সহ আরও অনেক সামগ্রী উদ্ধার করেছে। এই চক্রের বিস্তার আর কতদূর তা জানতে তদন্ত হচ্ছে।