এখনকার সময় কল সেন্টারে বহু যুবক-যুবতী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এমন একটি কল সেন্টার রমরমিয়ে চলছিল বেলুড় রোডে। বাকি সমস্ত কলসেন্টারের মত এখানেও ডিউটি ছিল তিনটি শিফটে। জানা গেছে কাজের মাইনেও ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু এই কল সেন্টারে গ্রাহকদের কোনো সমস্যার সমাধান করা হতো না। বরং চলছিল এক বিশাল প্রতারণা চক্র। যার পর্দা ফাঁস হতে রীতিমতো হতবাক সকলে। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোট ১৩ জন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের হাওড়া আদালতে পেশ করা হয়েছে এবং এদের মধ্যে চারজনের চার দিনের পুলিশি হেফাজত এবং বাকি ৯ জনের চার দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেন্টারটি চালাচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। কল সেন্টারে কাজেও আসতেন কিছু মানুষ। তাদের ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা মাইনে দেওয়া হতো বলে আনন্দবাজার সূত্রে খবর। ২৯ নম্বর বেলুড় রোডে চলছিল এই কল সেন্টারটি। কয়েকদিন আগে গোয়েন্দা সূত্রে খবর মেলে বেলুড় রোডের এই কল সেন্টার থেকে দেশ এবং দেশের বাইরে বহু লোক প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খোয়া যাচ্ছে মানুষের।
এরপরই শুক্রবার রাতে গোয়েন্দাদের একটি দল ওই কল সেন্টারে হাজির হয়ে অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে মোট ১৩ জন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে তারা। পুলিশ সূত্রে খবর ধৃতদের কাছ থেকে ৪টি ল্যাপটপ, ৮টি কম্পিউটার, মাইক্রোফোন এবং প্রচুর নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তরা প্রতারণার জাল ফাঁদত। দেশের এবং বিদেশের মানুষকে প্রলোভনের টোপ দিয়ে সর্বস্বান্ত করত। ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্ট বাকি রয়েছে ইত্যাদি নানা কথা বলেও বিভ্রান্ত করতো অনেক কে। গ্রাহকরা না বুঝে তাদের ফাঁদে পা দিয়ে অভিযুক্তদের শেয়ার করা মোবাইল লিংকে ক্লিক করে ফেলতেন। আর এর পরেই তাদের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তাদের ব্যাংক একাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হতো লাখ লাখ টাকা।
এইভাবে অগুনতি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা প্রতারিত মানুষের সংখ্যা প্রায় কয়েক হাজার। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কল সেন্টারটি একটি মূল প্রতারণা চক্রের এজেন্ট সেন্টার হিসাবে কাজ করত। অভিযুক্তদের মধ্যে ৪ জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাদের এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গোপনে হাওড়া সিটি পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ বেলুড় রোডের ওই আবাসনে অভিযান চালায়।