হাওড়ার ইছাপুর পূর্বপাড়ায় নিজের বাড়িতেই কারখানা চালাতেন এক ব্যক্তি। আর সেই কারখানার মধ্যেই ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একসাথে মারা পড়ল বাবা ও ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজকার মতো এদিনও সকাল ৭টা নাগাদ বাড়ির ভেতরে নিজের লেদ কারখানায় মেশিন চালাতে যান কারখানার মালিক শৈলেন হাজরা। মেশিনটি অন করার সময় আচমকাই তিনি বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন। বাবাকে বাঁচাতে দৌড়ে আসে ছেলে। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস। বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন ২১ বছরের ছেলেও। একই সাথে বাবা ও ছেলেকে হারিয়ে শোকে বাক্যহারা পরিবার।
ঠিক কী ঘটেছে এইদিন হাওড়ায়? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় মৃত বৃদ্ধের নাম শৈলেন হাজরা। তার বয়স ৫৮ বছর। বাড়িতেই একটি লেদ মেশিন কারখানা আছে তার। প্রতিদিন সকালে নিজের হাতেই কারখানার মেশিন চালু করেন তিনি। সেই ভাবেই এদিন মঙ্গলবার সকালেও কারখানার ঘরে ঢুকে মেশিন চালু করতে গিয়েছিলেন তিনি। মেশিন চালু করা মাত্রই তড়িতাহত হন ব্যক্তি। বাবাকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে বাঁচাতে দৌড়ে আসে ২১ বছর বয়সী ছেলে স্বপ্নিল হাজরা। বাবাকে ছোঁয়া মাত্র তিনিও তড়িতাহত হন। কোন ভাবে দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ছোট ছেলে সংবাদমাধ্যমকে এই বিষয়ে বলতে গিয়ে কেদে ফেলেন। বলেন, “বাবাকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখে দাদা দৌড়ে লোহার রড ধরতে যায়৷ লোহার রড ছোঁয়া মাত্র দাদাও পড়ে যায় বাবা দাদাকে এই অবস্থায় দেখে মা ওদের গিয়ে ধরতে যায়৷ তখন মায়ের হাতে বিদ্যুৎ এর শট লাগে। একইভাবে দিদিও দৌড়ে যায় ওদের কে বাঁচাতে কিন্তু বিদ্যুতের শক খেয়ে ছিটকে পড়ে যায়। আমি তখন দৌড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দি। মা আর দিদি বিদ্যুতের শকের ধাক্কা সামলে উঠে দাঁড়ালেও বাবা আর দাদা ওঠেনি।” একই সঙ্গে পরিবারের দুজনকে হারিয়ে আপাতত তারা শোকে বিহহ্বল।