দুই যুবক যুবতী প্রেমে পড়েছিলেন একে অপরের। কিন্তু তারা ছিলেন একই গোত্রের। তাই প্রেমের সম্পর্ক মানতে তীব্র আপত্তি ছিল পরিবারের। তাই অভিমানে আত্মঘাতী হন যুবক যুবতী। মর্মান্তিক হলেও এমন ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে এদেশে। ধর্ম, বর্ণ জাতের বেড়াজালে বাঁধা পায় ভালোবাসা। অনেক সময় এমন পরিণতি হয় প্রেমিক প্রেমিকার। চূড়ান্ত পথ বাছেন তারা। কিন্তু এই প্রেমিক প্রেমিকার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু আলাদা হল। আত্মহত্যার পর সম্পর্ককে মান্যতা দিল পরিবার। মৃত্যুর পর সেই যুবক যুবতী কে বিবাহ বন্ধনে বেঁধে তারপর ‘বর–কনে’কে মাটি চাপা দেওয়ার পর সিমেন্ট দিয়ে গেঁথে দেওয়া হল তাদের সমাধি। রীতিমত বিয়ের আসর বসল কবরস্থানে। বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ার পর নবদম্পতির পরিবার জানাল, নিজেদের করা ‘ভুল’ শুধরে নিতেই না কি এমন বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা!
এমন ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের জলগাঁওয়ে। নিহতরা হলেন পালাদ গ্রামের (Palad village) মুকেশ সোনাভানে (২২ বছরের) এবং নেহা ঠাকরে (১৯ বছরের)। পুলিশ জানিয়েছে এই দুই যুবক যুবতী, মুকেশ শোনওয়ানে এবং নেহা ঠাকরে একই গোষ্ঠীর মানুষ।
তাঁদের সম্প্রদায়ে একই গোষ্ঠীর ছেলে, মেয়ের মধ্যে বিয়ে হওয়ার নিয়ম নেই। মুকেশ এবং নেহার সম্পর্ককে বিয়ে অবধি পরিণতি দিতে রাজি হয়নি তাঁদের পরিবার। এই কারণে মুকেশ এবং নেহা অভিমানে আত্মঘাতী হন। রবিবার ভোরবেলা জলগাঁওয়ের ওয়েড গ্রামের একটি গাছে দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি ঘটার কিছুদিন আগে থেকে মেয়েটির (নেহা ঠাকরে) পরিবার তার কাকার গ্রাম ওয়েড গ্রামে বসবাস করছিল। একই গোষ্ঠীর হওয়ায় তাঁদের প্রেমের সম্পর্কে সায় দেননি বাড়ির লোকঅলজন। আশা নেই বুঝতে পেরে গাছে ঝুলে আত্মঘাতী হন যুগল। তাঁদের কাছে কোনো সুইসাইড নোট মেলেনি। তবে আত্মহত্যার আগে একটি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন মুকেশ সোনাভানে। তাতে শুধুমাত্র লেখা ছিল, ‘বিদায়’।
আত্মহত্যা করায় পুলিশের হস্তক্ষেপে দু’জনের দেহই ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ময়নাতদন্তের পর তাঁদের মরদেহ নিয়ে আসা হয় গ্রামে। তাদের কে মৃত্যু পরবর্তী বিবাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।শোভাযাত্রা করে তাঁদের দেহ সমাধিক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সম্পন্ন হয় এই ‘বিবাহ’।