পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অনেকদিন আগেই ঘোষণা করেছিলেন নিন্ম আয়ের পরিবারের মেয়ের বিয়ে হলে রূপশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া হবে সরকারি সাহায্য। বিয়ের আগে রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন করলে ২৫ হাজার টাকা সরকারি সাহায্য পাওয়া যায়। কিন্তু এই প্রকল্পের ভুয়ো আবেদন আসে প্রচুর। তেমনই একটি ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে (Kharagpur)। জাল বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে পরিবার! তদন্তে ভুয়ো আবেদন প্রকাশ্যে আসতেই পরিবার তড়িঘড়ি করে নকল বিয়ের নাটক।
রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা পেতেই ফর্ম ফিলাপ করে জমা দিয়েছিলেন বেলদা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নবোদয় পল্লির সুলেখা দাস অধিকারী। নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে পৌঁছে বিয়ের কার্ড-সহ পাত্রীর ডকুমেন্টস ও আবেদনপত্র জমা দেন। ওইদিন রাতেই বিয়ে হওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎই বিয়ে বাড়ীতে তদন্ত করতে গিয়ে রীতিমত অবাক হয়ে যান নারায়ণগড় ব্লকের বিডিও কৃশানু রায় ও জয়েন্ট বিডিও দিলবার হোসেন। পাত্রীর বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তারা দেখেন সেই বাড়িতে বিয়ের কোনও প্রস্তুতি নেই!
বিডিও এবং আর জয়েন্ট বিডিও বাড়িতে পৌছতেই শশব্যস্ত হয়ে ওঠে মেয়েটির পরিবার। নকল বিয়ের নাটক করতে থাকে তারা। বাড়ির মেয়েকে কনে হিসেবে সাজাতেও বসে যান। সব কিছু সন্দেহজনক লাগতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন তারা। আর তাতেই সামনে আসা আসল সত্য। মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেছিল পাঁচ মাস আগেই। কিন্তু কোন কারণে সেই সময়ে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা নেওয়া হয়নি। তাই সেই টাকা পেতে আবারো ভুয়ো বিয়ের কার্ড ছেপে টাকা পাওয়ার চেষ্টা করেন সুলেখা দাস অধিকারী। ভুয়া তথ্য দিয়ে অপরাধী তিনি। ভুল হয়ে গিয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা স্বীকার করলেন প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনে।
ওই তরুণীর আত্মীয় প্রদীপচন্দ্র দাস প্রথমে বিডিওর সামনে দাবি করেন, বিয়ের কোনও তথ্য তারা ভুল দেননি। পরে চাপের মুখে তিনি স্বীকার করেন ভুয়ো তথ্য দেওয়ার বিষয়টি। বিডিও তাঁদের ভুল ধরিয়েছেন বলেন তিনি। এই বিষয়ে নারায়ণগড়ের বিডিও কৃশানু রায় জানান, “আমাদের কাছে রূপশ্রী প্রকল্পের বহু আবেদন জমা পড়ে এবং সেগুলো আমাদের খোঁজ খবর করে দেখতে হয়। আমাদের কাছে একটা খবর ছিল রূপশ্রীর ভুয়ো আবেদন এসেছে। তাই আমরা নিজে পৌঁছে দেখতে যাই। সেখানে পৌঁছে দেখি বিয়ের কার্ডে উল্লেখিত তারিখ অনুযায়ী হচ্ছে না কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়েটা পাঁচ মাস আগেই হয়ে গিয়েছে।” তিনি জানিয়েছেন, আবেদনকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।