জোর করে সিজার করানোর চেষ্টার অভিযোগ। অপারেশন করে সন্তান প্রসবে রাজি না হওয়ায় অন্তঃসত্ত্বাকে (Pregnant) চড় মারার অভিযোগ উঠল চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বর। হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ওই প্রসূতির পরিবার। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস হাসপাতাল সুপারের।
পানাগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন মহিলা। তবে শারীরিক অস্বস্তি বাড়তে থাকায় শুক্রবার দুপুরে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার হয় তাঁকে। হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বিনীতা কুমারী তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করেন। বাড়ি চলে যেতে বলেন চিকিৎসক। তবে ঝুঁকির আশঙ্কায় হাসপাতাল থেকে বাড়ি যেতে রাজি হননি অন্তঃসত্ত্বা। এরপর সন্ধেয় হাসপাতাল সুপার ডাঃ ধীমান মণ্ডলের দ্বারস্থ হন। সুপার আপাতত তাঁকে হাসপাতালেই থাকতে বলেন। সেই মতো অন্তঃসত্ত্বা থেকে যান।
অভিযোগ, শনিবার সকালে চিকিৎসার নামে অন্তঃসত্ত্বাকে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বিনীতা কুমারী মারধর করেন। কেন তিনি আগেরদিন সন্ধেয় সুপারের কাছে গেলেন, সেই প্রশ্ন করেন চিকিৎসক। জোর করে বন্ডে সই করিয়ে অস্ত্রোপচার করতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। প্রতিবাদ করেন ওই মহিলা। এরপরই তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ওই চিকিৎসক চড় মারেন বলেই অভিযোগ প্রসূতির।
ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে প্রসুতি ওয়ার্ড ছেড়ে ওই মহিলা হাসপাতাল সুপারের ঘরের সামনে চলে আসেন। রোগীর পরিজনেরাও জড়ো হয়ে যান। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে বিনীতা কুমারী নামে ওই চিকিৎসককে শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনার জেরে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে। পরিস্তিতির সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পুলিশের কাছেও অন্তঃসত্ত্বার পরিজনেরা ক্ষোভপ্রকাশ করতে থাকেন। এরপর রোগীর পরিজনদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
এই ঘটনায় ফের বিতর্কে রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল। অভিযুক্ত চিকিৎসক বিনীতা কুমারী অন্তঃসত্ত্বাকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ ধীমান মণ্ডল জানান, তিনি মারধরের অভিযোগ পেয়েছেন। তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। প্রসূতির পরিজনদের সুবিচারের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।