তেজপাতা একটি সুগন্ধিযুক্ত ঔষধিগুণ যুক্ত পাতা। ঝোল হোক পায়েস বা পোলাও। যেকোনো ধরনের খাবারে সুগন্ধ যোগ করতে এ পাতা ব্যবহার অন্যতম। তেজপাতার নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে তেজ। মশলা হিসেবে খুবই নামকরা পাতা তেজপাতা। এছাড়াও প্রচুর গুণগুন রয়েছে এই পাতার। তবে তেজপাতা শুধু খাবারে ব্যাবহৃত হয়ে শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে তা নয় প্রাচীন কাল থেকেই এই পাতার বহুল ব্যবহার রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো তেজপাতা পোড়ানো ধোঁয়ার ব্যাবহার। আশ্চর্য সব উপকার পাবেন। জেনে নিন বিশদে….
• বিশেষজ্ঞরা বলছেন তেজপাতা পোড়ার ধোঁয়া নাকে গেলে এর সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। একটি ছাইদানিতে কয়েকটি তেজপাতা রেখে তাতে আগুন দিয়ে ১০ মিনিট ধরে পুড়িয়ে ধোঁয়া বার করতে হবে। এর সঙ্গেই কিন্তু পুড়বে তেজপাতার মধ্যে উপস্থিত এর তেল আর বাকি ঔষধি উপাদান। তেজপাতা পোড়ানোর সাথে সাথেই দেখবেন ঘরে ধোঁয়ার রূপে সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভেষজ তেজপাতার গন্ধ শরীর স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী।
• দিনশেষে খাটা খাটনির পর সবার শরীরেই আসে ক্লান্তি। কাজকর্ম শেষে অফিস থেকে বাড়ি ফিরে ১-২ টো তেজপাতা জ্বালিয়ে ঘরের কোণে রেখে দিন। এই ধোঁয়া আপনার ক্লান্তি দূর করবে! আসলে তেজপাতায় মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পিনাইন, সিনেওল ও এলিমেসিনের ইত্যাদি নানা উপাদান, যা পোড়ালে ধোঁয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে। আর এই ধোঁয়া নার্ভ সিস্টেমের সক্রিয়তা বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া এনার্জিও ফিরে আসে ফলে, নিমেষে শরীর হয় তরতাজা!
• তেজপাতা পুড়িয়ে সেই ঘরে তেজপাতা পোড়ানো ধোঁয়া ছড়িয়ে দিলে জীবানু নাশ হয়। ফলে সহজেই কোনো ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে না বা রোগ জীবাণু সংক্রমণ ঘটে না। বাড়িতে কীটপতঙ্গের, মশা, মাছির উপদ্রব বেড়ে গেলে কাজে লাগাতে পারেন তেজপাতা। তেজ পাতার ধোঁয়া আরশোলা, পিঁপড়ে ছারপোকা, মাছি ইত্যাদি নানা পোকা-মাকড়ের উপদ্রব কমায়।
• প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তেজপাতাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি শরীরে মহৌষধের মতন কাজ করে। এমনকি প্রাচীন ইউরোপীয় বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে প্রাচীন গ্রীক ও রোমানরা তেজপাতা পোড়ানো ধোঁয়াকে ওষুধের মতন ব্যবহার করত।
• আমাদের প্রায় কারো শরীর নিরোগ নয়। সকলের শরীরেই কোনো না কোনো রোগ উপস্থিত। কেউই শতভাগ সুস্থ নই। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা ভীষণ জরুরি। আপনি যদি প্রতিদিন একটি তেজপাতা পুড়িয়ে তার গন্ধ শোকেন তাহলে শরীর অনেকটাই সুস্থ থাকবে। আর সেইসঙ্গে বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।