ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩ কোটির উপরে। পাশাপাশি সারা পৃথিবীর মত ভারতেও চলছে করোনা টিকাকরণের কাজ। ক্রমাগত লকডাউন , সামাজিক বিধি নিষেধ ঘিরে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। কবে ঠিক হবে পরিস্থিতি কেউ জানে না। গত দেড় বছরে যেন পাল্টে গেছে চেনা পৃথিবীটা। মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে পা ফেলা যায় না। নিত্য সঙ্গী হান্ড স্যানিটাইজার। গরম , বর্ষা কোনো সময়েই ভাইরাসের আতঙ্কে মাস্ক খোলা যায় না। গরম লাগে, নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয় কারো কারো। কিন্তু মাস্ক সুস্থ থাকতে ভীষণ প্রয়োজনীয়। কিন্তু এখন তো এসে গেছে করোনা ভাইরাসের টিকা। দেশ জুড়ে চলছে টিকাকরন। সেই ক্ষেত্রে যদি কোনো ব্যাক্তির করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজই নেওয়া হয়ে যায় , সেই ক্ষেত্রে উক্ত ব্যাক্তির কি আর মাস্ক পরে থাকার প্রয়োজন আছে? কি বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?
এই প্রশ্নের উত্তর হল— না, একেবারেই মাস্ক ছাড়া চলা যাবে না। এখনও পর্যন্ত সবথেকে কার্যকরী যে সব করোনা টিকা বাজারে এসেছে সেই সবকটিই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তা প্রতিহত করতে সক্ষম। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়েছেন এমন ব্যক্তি এই ভাইরাস নিজের শরীরে বহন করবেন না এমনটা বলা হয়নি। করোনা টিকার দুটি ডোজ সম্পূর্ন করেছেন এমন একজন মানুষ হয়তো এই ভাইরাসের সংক্রমনে অসুস্থ হয়ে পড়বেন না, বা তাঁর মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোনও লক্ষণ সেভাবে চোখে পড়বে না, কিন্তু তিনি নিঃশব্দে এই ভাইরাস অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেন। আর তাই ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যাক্তি যদি মাস্ক না পড়েন বা সামাজিক ভাবে বিধি নিষেধ না মানেন তাহলে তা বেশিমাত্রায় হবে, বলাই বাহুল্য। সেক্ষেত্রে টিকা পাননি এমন মানুষের জন্য আসতে পারে চরম বিপদ।
ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান’য়ের প্রধান স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. প্রিতি মালানি জানিয়েছেন, “মাস্ক পরা আর সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার দিন এখনই শেষ হচ্ছে না। যতদিন না মানুষের মধ্যে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরি হচ্ছে, ততদিন এই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
আর এখনও অবধি যে কটি করোনা টিকা আবিষ্কার হয়েছে তার কোনোটিই শতভাগ কার্যকর নয়। তাই এখনই জীবন থেকে মাস্ক সরিয়ে দেওয়ার কথা একেবারেই ভাবা যাবে না।