এক যুবক ওষুধ কিনতে যাচ্ছিলেন। খোদ জেলাশাসক লকডাউনের (Lockdown) মধ্যে বাইরে বেরনোর কারণে আচমকাই তাঁর উপরে চড়াও হলেন। চড় তো মারলেনই সপাটে। সেই সঙ্গে ফোনটিও ছুঁড়ে ফেলে দিলেন তাঁর রাস্তায়। এখানেই শেষ নয়, ওই যুবকের নামে পুলিশ এফআইআরও করল। এভাবে একজনকে চড় মারার ভিডিওটি ভাইরাল (Viral video) হয়ে গিয়েছে। তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সুরজপুরে ছত্তিশগড়ের (Chattisgarh) ।
ঠিক কী হয়েছিল? মোবাইলে তুলে রাখা ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, ওই ভদ্রলোক কিছু কাগজ দেখাতে যাচ্ছিলেন জেলা কালেক্টরকে। কিন্তু জেলাশাসক রণবীর শর্মার সেদিকে মন ছিল না। তিনি ওই ব্যক্তির থেকে এগিয়ে গিয়ে ফোনটি নেন। তারপর সেটা ছুঁড়ে ফেলে দেন রাস্তায়। এরপরই তাঁকে সজোরে একটি চড় মারেন। তারপরই তিনি ওই ব্যক্তিকে মারধর করার জন্য পুলিশকর্মীদেরও নির্দেশ দেন। দেখা যায় লাঠি নিয়ে ওই যুবকের উপরে পুলিশকর্মীরা চড়াও হয়েছে। যিনি ভিডিওটি তুলছিলেন, তাঁকেও বকাবকি করতে দেখা যায় রণবীর শর্মাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি বাইক চালাচ্ছিলেন খুব জোরে। এবং তিনি বাইক থামাননি তাঁকে থামাতে বলার পরও। এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআরও ।
এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তি সাহিল গুপ্তার দাবি তিনি যাচ্ছিলেন ওষুধ কিনতে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওষুধের দোকানে যাচ্ছিলাম। জেলাশাসক আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, আমি কোথায় যাচ্ছি। আমি বললাম। কিন্তু উনি আমাকে মারতে শুরু করলেন। সেই সঙ্গে বাকিদেরও নির্দেশ দিলেন আমাকে মারার।’’
বিষয়টি নিয়ে ওই জেলাশাসকও মুখ খুলেছেন। তাঁর মতে, তিনি ওই ব্যক্তিকে কোনও ভাবেই কোনও রকম অসম্মান দেখাতে চাননি। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এভাবে কাউকে মারধর করা যায় কিনা নিয়ম ভাঙলেও । এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে এবিষয়ে বলতে গিয়ে ওই জেলাশাসক জানান, ‘‘আজ একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আমি এক ব্যক্তিকে চড় মারছি লকডাউনের সময় রাস্তায় বেরনোর জন্য। আমি সেজন্য ক্ষমা চাইছি। ওঁকে অসম্মান করার কোনও উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আসলে আমাদের এখানে খুব কড়া ভাবে করোনাকে রোখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কেননা বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে। আমি নিজে আক্রান্ত হয়েছিলাম। সেরে গিয়েছি। কিন্তু আমার মা এখনও চিকিৎসাধীন।’’
কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল ওই জেলাশাসককে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।