হাইতিতে ঘটেছে বিধ্বংসী ভূমিকম্প। শনিবারের হঠাৎ এই প্রবল ভূমিকম্পে এখনও অবধি মৃত্যু হয়েছে তিনশোর অধিক মানুষের। নিখোঁজ বহু। ভূমিকম্পের তীব্রতায় বহু ঘরবাড়ি মুহূর্তেই প্রায় ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়। ২০১০-র হাইতিতে হয়ে যাওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি এখনও সামলে উঠতে পারেনি সেই দেশ। এরই মধ্যে আবারও এত জোরাল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল এই দেশ। মৃতের সংখ্যা নাহলেও ৩০৪ জন বলে জানা গেছে। ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়েছেন যারা তাদের উদ্ধার করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দলগুলি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে, বহু মানুষ এখনও ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ি ঘরের তলায় জখম ও নিখোঁজ।
জানা গিয়েছে শনিবার স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ জোরালো ভূকম্পন অনুভূত হয় দক্ষিণ-পশ্চিম হাইতিতে। তারপর থেকেই একের পর এক ‘আফটারশক’ কেঁপে উঠতে থাকে হাইতির বিস্তীর্ণ এলাকা। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে, রাজধানী পোর্ত-অউ-প্রিন্সের পশ্চিম দিকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে ভূমিতল থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই ভয়াবহ ভূমিকম্পের উৎসস্থল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.২।
এই জোরালো কম্পনে মাত্র কয়েক মিনিটের ভেতরেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় হাইতির অনেকে এলাকা। কোথাও চোখের সামনে থেকে ধ্বসে উধাও হয়ে গিয়েছে রাস্তা। কোথাও আবার রাস্তার দু’পাশের লম্বা উচু বাড়িগুলি ভেঙ্গে মিশে গিয়েছে ধুলোয়। দেশের বাকি জায়গাতেও অনুভূত হয় কম্পন। শুধু তাই নয়, পড়শি দেশগুলিতেও দীর্ঘ সময় ধরে আফটার শক অনুভূত হয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি ভূমিকম্পের পর ইতিমধ্যেই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় হাইতি মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন “এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যতটা দ্রুত সম্ভব ধ্বংসস্তুপের নিচে থেকে জীবিতদের উদ্ধার করে তাদের চিকিৎসা দেওয়া।”
তিনি জানিয়েছে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে আহতদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় হাসপাতালগুলো । বহু মানুষ সেখানে আহত অবস্থায় পৌঁছচ্ছে আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিতে। সোশ্যাল মিডিয়াতে মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ভয়াবহ ধ্বংসের চিত্র ফুটে উঠেছে। সেই দেশের রাস্তা জুড়ে শুধু আর্ত মানুষের চিৎকার। তারা তাদের স্বজনকে খুঁজছে। জল ও চিকিৎসার সহায়তা চাইছে।
২০১০ সালেও এক মারাত্মক ভূমিকম্পের স্বীকার হয়েছিল হাইতি। সেই বার রিখটার স্কেলে ভূকম্পনের তীব্রতা ছিল ৭। কমপক্ষে আড়াই লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিলেন সেই ভূমিকম্পে। সেই ভূমিকম্পের তীব্রতা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি হাইতি। দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সে বার ৫০ লক্ষ ডলার দিয়ে হাইতির পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। শনিবারের ভূমিকম্পে আবারও এই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আতঙ্কিত দেশের মানুষ।