আবার সারা পৃথিবী জুড়েই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ভারতেও একই ছবি। করোনা অতিমারির ভয়াবহ স্ট্রেন ডেল্টার প্রভাব কিছুটা কমতে না কমতেই ওমিক্রন কম্পন ধরাচ্ছে পৃথিবীর বুকে। আবারো সারা দুনিয়ায় ফিরতে চলেছে সেই চেনা ছবি, বন্ধ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা, থেমে যাচ্ছে জনজীবন, বাধা আসছে স্কুল-কলেজ-কর্মস্থলে। কিন্তু সকলের মনে একটাই প্রশ্ন, এইভাবে আর কতদিন? করোনা কী বারবার ফিরে ফিরে আসবে? প্রতি বছর কী একই অবস্থা দাঁড়াবে?
সম্প্রতি এই বিষয় এ আশার বাণী শুনিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO-র প্রধান টেড্রস আধানম। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এই বছরেই অর্থাৎ ইংরেজি নতুন বছর ২০২২-তেই শেষ হতে পারে করোনা মহামারী। কমতে পারে কোভিডের ভয়াবহতা। এই বছরই করোনা ভাইরাসকে হারিয়ে বিজয় লাভ সম্ভব হতে পারে। সবমিলিয়ে ২০২২ সালেই করোনা ভাইরাসের শেষের শুরু হতে চলেছে। এমনই আশা ব্যক্ত করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠনের প্রধান ড. টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসাস। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে বলছেন তিনি একথা? অবশ্যই এই জয় এমনি এমনি আসবে না? করোনা কে হারাতে গেলে মানতে হবে একটি শর্ত। এই শর্তের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
কী সেই শর্ত? টেড্রস এর বয়ান, ভ্যাকসিন একমাত্র হাতিয়ার। তবে ভ্যাকসিন তখনই কার্যকরী যখন সারা বিশ্ব সমানভাবে ভ্যাকসিন পাবে। দূর করতে হবে টিকা বৈষম্য। সারা পৃথিবীর সমস্ত দেশ কে একসাথে করোনার মোকাবেলা করতে হবে। তাই টিকাকরণের কারণে সবাইকে একসাথে স্বার্থ ভুলে গিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। করোনার প্রকোপ থেকে পৃথিবীর কোন দেশ রেহাই পায়নি। তাই এই মহামারী চলতে থাকলে সব দেশেরই ক্ষতি। সেটা বুঝতে হবে। কোন দেশের ক্ষতির পরিমাণ কখন বেড়ে যাবে সেটা আগাম আঁচ করা সম্ভব নয়। তাই বৈষম্য দূর করে সকলে টিকা নিয়ে সুরক্ষিত হলেই কোভিডও দূর হবে। জানিয়েছেন হু প্রধান টেড্রস আধানম। এটাই একমাত্র শর্ত যেটা কোভিড কে হারাতে পারবে।
এখন যদি স্বার্থপরের মতন পৃথিবীর উন্নত দেশগুলি শুধুমাত্র নিজের নাগরিকদের টিকা দেওয়ার কথা চিন্তা করে সামগ্রিকভাবে পৃথিবী থেকে করোনা দূর হবে না। সমস্যা শেষ হওয়া তো দূর অস্ত। বরং সারা পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে নিয়ে সব দেশগুলোকে একসঙ্গে ভাবতে হবে। মনে রাখতে হবে, গোটা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অন্তত ৭০ শতাংশকে টিকা দিতেই হবে এ বছর। তাহলেই কোভিডকে রুখে দেওয়া যাবে এই বছরই।
সম্প্রতি পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী হু প্রধান টেড্রস জানিয়েছেন পৃথিবীর বেশ কিছু দেশ সেইভাবে টীকাকরণ করতে পারেনি, যেমন বুরুন্ডি, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, চাদ এবং হাইতির মতো দেশগুলি। সেখানে জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রাপকের সংখ্যা এক শতাংশের কম। যেখানে তুলনামূলক ধনী দেশ গুলিতে দেশগুলোতে টিকাকরণের পরিসংখ্যান ৭০ শতাংশেরই বেশি। এই অসামঞ্জস্যের শেষ করলেই করোনাভাইরাস ফিরে আসতে সাহস পাবে না।