গত দেড় বছর ধরে বিশ্বে থাবা গেড়ে বসে আছে করোনা ভাইরাস। আতিমারির কবলে গোটা মানব সভ্যতা। কিন্তু মানুষ যখন করোনাভাইরাস মহামারীর মুখোমুখি হচ্ছে, ছাড় পাচ্ছে না বন্য প্রাণীরাও। তারাও করোনা সংক্রমনের হাত থেকে সম্পূর্ন সুরক্ষিত নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি বন্য প্রাণীদের উপর একটি নতুন গবেষণা করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে যে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে সাদা-লেজযুক্ত হরিণ (white-tailed deer) এক-তৃতীয়াংশ -এর শরীরে সার্স কোভিড- ২ (SARS-Cov-2) এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে, যা এই বিষয়কেই নির্দেশ করে যে তারা কোনো না কোনোভাবে সংক্রামিত হয়েছিল।
গবেষকরা করোনা মহামারী চলাকালীন সংগৃহীত নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন যে কোন বন্য প্রাণীর মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। এই প্রজাতির যত হরিণের থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল তাতে দেখা গিয়েছে এর অন্ততঃ ৪০ শতাংশ নমুনায় অ্যান্টিবডি মিলেছে। গবেষকরা মার্কিন প্রদেশের সাদা-লেজযুক্ত হরিণ (white-tailed deer) উপর সেরো-সার্ভের মাধ্যমে লক্ষ্য করেছেন যে এই প্রজাতির হরিণের সার্স কোভিড- ২ এর সাথে সম্পর্কিত উচ্চ সম্পর্কযুক্ত রিসর্ভার (reservoirs) রয়েছে।
অবশ্য পশুদের শরীরে করোনা সংক্রমণের ঘটনা এই প্রথম নয়। এই উদাহরণ এর আগেও দেখা গিয়েছে। ভারতের কয়েকটি রাজ্য হায়দরাবাদ, জয়পুর এবং চেন্নাইয়ের চিড়িয়াখানায় সিংহের শরীরে মিলেছিল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এমনকি ইন্দোনেশিয়ার চিড়িয়াখানায় দুটি বাঘও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু চিড়িয়াখানার ক্ষেত্রে পশুদের মানুষের সংস্পর্শে আসার থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। সেই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছিল যে হয়ত মানুষের থেকেই করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে পশুগুলি। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট টেল ডিয়ার এর মত বন্য প্রাণীর শরীরে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া সত্যিই যথেষ্ট চিন্তার। কেনোনা পশুদের মধ্যে থেকে এই করোনা ভাইরাস আবারও ছড়িয়ে পড়তে পারে মানুষের মধ্যেও। এছাড়া এটাও সম্ভব যে বন্য প্রাণীর দেহে এই ভাইরাস নিজের রূপ বদলে আবারও হয়ে উঠতে পারে ঘাতক। এমনকি সংক্রমিত করতে পারে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষদেরও। এই বিষয়ে
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে জীব বিজ্ঞানীরা মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, নিয় ইয়র্কের ইত্যাদি জায়গা থেকে ৩৮৫টি বন্য প্রাণীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ১৫২টি রক্তের নমুনাতেই করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরে শরীরে যে অ্যান্টি বডি তৈরী হয় তার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।