সন্তান নেওয়া এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা যে কোনও দম্পতির জন্য৷ কিন্তু শুধু ইচ্ছা থাকলেও যদি কোনও ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হন তাহলে মন ভেঙে যেতে পারে৷ এরকমই এক দম্পতির সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও বিশেষজ্ঞরা সাহায্য করে বিরাট অবদান রেখেছেন এখানে৷
এই দম্পতির নাম ইয়ানা ও নিকো, তারা সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছিলেন৷ কিন্তু তারা হসপিটালের প্রসূতি বিভাগে না গিয়ে দ্বারস্থ হতে হয়েছে প্রফেসর ইয়োহানেস রিঙের৷ যদিও তিনি এলার্জি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তবুও এই দম্পতির বিশেষ সমস্যা বুঝতে তার বেশ কয়েক মাস বেগ পেতে হয়েছিল৷ এই দম্পতি এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কন্ডোমের ব্যবহার করতেন সেক্স এর সোনায় গর্ভনিরোধক হিসেবে ৷ বিগত বছর চারেক কোনও সমস্যা হয়নি তাদের৷ এরপর সন্তান নেবেন মনে করলেন আর চেষ্টা শুরু করলেন৷
বছর ২৭ এর ইয়ানা সেক্সের সময় কনডম ব্যবহার না করার কারণে প্রবল চুলকানি, ত্বকে ফুসকুড়ি ও শ্বাসকষ্টে ভুগতে লাগলেন৷ ডাক্তারের কাছে এ এক অদ্ভুত ও রহস্যজনক সমস্যা৷ তাই নিকো মন থেকে খুব ভেঙে পড়েন৷ প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন যে এই এলার্জির কারণ হিসেবে তার ঘাম বা পারফিউম এর কথা ভেবেছিলেন৷
তারা সমস্ত সমস্যার কথা জানালেন ইয়োহানেস রিঙের কাছে ৷ এমনকি এও বললেন যে, তাদের ব্যাঙ্গ বিদ্রুপও শুনতে হয়েছে৷ ইয়ানা বলেন যে তার সব থেকে কষ্টকর ও খারাপ পরিস্থিতি ছিল চুলকানি ও শ্বাসকষ্ট৷ মিলনের পর বেশ ঘন্টা খানেক শ্বাসকষ্ট থাকতো তার।
প্রথমে ইয়োহানেস রিং এমন কিছু জিনিস সন্দেহ করেছিলেন, যে এটা নিশ্চই কোনও সংক্রমণের কারণে ঘটছে৷ কিন্তু তার রক্ত পরীক্ষা করা হলেও সেখানে কিছু পাওয়া গেল না৷ তখন অ্যালার্জির সন্দেহই তীব্র হল কোনও সুগন্ধির কারণে৷ সামান্য পরিমাণ খাদ্য বা ওষুধের অবশিষ্ট অংশ নিয়েও শরীরের তরল অংশে সংশয় ছিল৷
পরীক্ষাও করা হল, কিন্তু কোনও প্রকার পদার্থের কারণে এলার্জিও ধরা পড়েনি৷ কোনও কারণই খুঁজে পেলেন না ইয়োহানেস রিং৷ কিন্তু এই দিনের পর দিন হতাশার মুখে এগিয়ে যাওয়া দম্পতিকে তিনি সাহায্য করতে চাইছিলেন৷ আগের মতই সেক্সের সময় কন্ডোমের ব্যবহার শুরু করলেন তারা৷ সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা আপাতত বন্ধ রাখলেন তারা৷
কিন্তু একটা নতুন কথা এল ইয়োহানেস রিঙের মাথায়৷ মনে হল, তিনি হয়ত সঠিক উৎসের সন্ধান করেননি অ্যালার্জির৷ পাশাপাশি তার মনে সন্দেহ দানা বাধঁতে থাকলো৷ ইয়ানার এলার্জির কারণ সম্ভবত নিকোরই বীর্য৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের কাছে তখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমান ছিলনা৷ এতকিছুর পরও তা কি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে?
সেই পরীক্ষার ফল পাওয়া গেলো মাস তিনেক পর৷ পরীক্ষার ফলাফল এলে দেখা গেলো সত্যিই ইয়ানার, নিকোর বীর্য থেকে এলার্জি হচ্ছে৷ প্রফেসর রিং বলেন, ‘ ফল এসে গিয়েছে ল্যাবের টেস্টের৷ যেমনটা ভেবেছিলাম আমরা, সেটাই ঠিক৷ অ্যালার্জির কারণ বীর্যের ব্লিস্টার ফ্লুইডের মধ্যে সেমিনাল প্লাজমার উপাদানই ৷ সেইসঙ্গে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি পিএসএ, অর্থাৎ প্রস্টেটের নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনও৷’
সেই অ্যালার্জির এই প্রথম নির্দিষ্ট সংজ্ঞা স্থির হল৷ সেটাই প্রথম পদক্ষেপ দম্পতিকে সাহায্য করার পথে৷ এক ডিসেনসিটাইজেশন প্রক্রিয়ার ফলে শেষ পর্যন্ত ইয়ানার উপকার হলো৷ পুরোপুরি ভাবে অ্যালার্জি দূর হল৷ ফলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলেন দুজনেই৷ অবশেষে তারা সন্তান লাভ করলেন ৷