লোকাল ট্রেনে মহিলাদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়া চারজন যুবক, যার জেরে তুমুল বিবাদের সৃষ্ট হয় সোদপুর স্টেশন চত্বরে। গতকাল রাত ৯.৪৫ এর কৃষ্ণনগর লোকালের ঘটনা।
মহিলা যাত্রীদের অভিযোগ, গতকাল রাতের আপ কৃষ্ণনগর লোকালের লেডিস কম্পার্টমেন্টে উঠে পড়েন চার জন পুরুষ যাত্রী। তাদের ওই কামরার মহিলারা ট্রেন থামলে নেমে যেতে বললেও ওই চার পুরুষ যাত্রী দাবি করেন, এটি স্টাফ স্পেশাল ট্রেন, এতে কোনও মহিলা কামরা নেই। এই নিয়ে এরপর কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তারা। কিন্তু কামরায় উপস্থিত মহিলাদের অভিযোগ ওই চার পুরুষ যাত্রী সীমা অতিক্রম করে যায়। কামরায় উপস্থিত মহিলা যাত্রীদের উদ্দেশে চলে কটূক্তি, এমনকি তাদের দিকে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গীও করে ওই চার জন। এর পরেই বাকি মহিলা যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বিবাদ চরম আকার ধারণ করে। সোদপুর স্টেশনে কৃষ্ণনগর লোকাল এসে থামতেই বিক্ষেভে ফেটে পড়নে কৃষ্ণনগর লোকালের মহিলা যাত্রীরা। মহিলা কামরা থেকে ওই চার যুবককে নামিয়ে তাদের মারধর করা হয়। পাশাপাশি সোদপুর জিআররপিকে ঘিরে প্রবল বিক্ষোভ দেখায় মহিলারা। এনিয়ে তুলকালাম হয় গতকাল সোদপুর স্টেশন এই নিয়ে আবারও লকডাউন চলাকালীন লোকাল ট্রেনের নিরাপত্তা ঘিরে আবার প্রশ্ন উঠলো। মহিলাদের জন্যে সংরক্ষিত কামরায় রাতের দিকে জিআররপি নেই কেন তাও প্রশ্ন ওঠে।
কড়া কোভিড বিধিনিষেধের মেনে গত মে মাস থেকেই চালু হয়েছিল স্টাফ স্পেশ্যাল লোকাল ট্রেন। কিন্তু তারপর থেকেই অভিযোগ আসতে থাকে পূর্ব রেলের উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় পুরুষ যাত্রীরা হামেশাই উঠে পড়ছেন। এই নিয়ে জিআরপি ও আরপিএফের কাছে অসংখ্য অভিযোগও জমা পড়েছে। পুরুষ যাত্রীরা এই ভাবে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় ওঠে পর্যায় মহিলারা অনেক সময়ে নিরাপত্তার অভাব অনুভব করছেন। বিভিন্ন স্টেশন থেকে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনের মহিলা কামরায় জোর করে উঠে পড়ছেন পুরুষ যাত্রীরা। মহিলারা প্রতিবাদ করলে উল্টে দেওয়ার হচ্ছে ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আসনও দখল করে নিচ্ছেন তাঁরা।
কাল ট্রেনের কামরায় আইনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব জিআরপি-র। কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মীর অভাবে সব লোকাল ট্রেনের উপরে নজরদারি চালানো তাদের পক্ষে খুব একটা সহজ কাজ হচ্ছে না। অথচ, গত কয়েক মাস ধরেই ক্রমাগত বাড়ছে মহিলা নিত্যযাত্রীদের তরফে আসা অভিযোগের সংখ্যা। ভুরি ভুরি অভিযোগ আসছে রেলের দফতরে। পুরুষ যাত্রীদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ। রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র জিআরপি-র পক্ষে আর কামরায় নজরদারি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় তাই এবার থেকে আরপিএফ কর্মীরাও সেই সহযোগিতায় নামবেন।কিন্তু তা বাস্তবায়িত কবে হবে এই নিয়ে সংশয়ে যাত্রীরা।