দিল্লি সংলগ্ন গাজিয়াবাদ থেকে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। সেখানে দশম শ্রেণীর এক ছাত্র তার বন্ধুকে খুন করেছে।হত্যার কারণ শুনলে আপনার পায়ের তলার মাটি সরে যাবে। আসলে ছেলেটির পড়ালেখায় মন বসেনি। সে তার পড়াশোনা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার পরিবারের চাপে তাকে ফের স্কুলে যেতে হয়েছিল। তারপর কোথাও থেকে সে শুনতে পায় জেলে গেলে পড়াশুনা করতে হবে না। এ কথা শুনে তার মনে একটা আশা জেগে উঠল। জেলে যেতেই হবে। কিন্তু কিভাবে? অনেক ভাবনাচিন্তার পর সে তার বাড়ির কাছাকাছি বসবাসকারী তার ১৩ বছরের বন্ধুকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয় এবং জেলে যাওয়ার জন্য খুন করবে সিদ্ধান্ত নেয়। এর জন্য ছেলেটি অনেক সিনেমাও দেখতে শুরু করে।সোশ্যাল মিডিয়াতেও কীভাবে খুন করতে হয় সেই সম্পর্কিত ভিডিও দেখতে শুরু করে। এরপর ঠিক সিনেমার মতই প্রথমে পাড়ায় বসবাসকারী ছেলেটির সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ও পরে তাকে হত্যা করে।
১৬ বছরের এই ছেলেটির পড়াশুনা মোটেও ভালো লাগতো না। গত ৭ মাস ধরে পড়ালেখা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছিলেন সে। এর জন্য সে যে কোনো কিছু করতে প্রস্তুত ছিল, শুধু পড়াশোনা নয়। জেলে লেখাপড়া নেই জানতে পেরে জেলে যাওয়ার কথা ভাবে ছেলেটি।অনেক মাস ধরেই খুনের পরিকল্পনা করছিল যে সে তলে তলে কেউ টেরও পাননি। আগের দিন ছেলেটি অবশেষে তা কার্যকর করে। ১৩ বছরের প্রতিবেশী বন্ধুকে হত্যার জন্য তাকে মিসাল এক্সপ্রেসওয়ের কাছে নিয়ে যায় অভিযুক্ত। সেখানে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে কাঁচের টুকরো দিয়ে কিশোরটির গলায় আঘাত করে। বন্ধু মারা গেছে কি না তা জানার জন্য ছেলেটি এমনটা করেছিলেন। মৃতের শরীরে কোনো নড়াচড়া না দেখে অভিযুক্ত নিজেই গার্ডেন পুলিশ চৌকিতে পৌঁছান। সেখানে তিনি পুলিশের কাছে তার পুরো ঘটনা খুলে বলেন।
পুলিশকে কী বলল অভিযুক্ত কিশোর
এসপি দেহাত ইরাজ রাজা জানান, অভিযুক্ত কিশোরের কথায় প্রথমে পুলিশের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ১৩ বছর বয়সী নীরজের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ সাড়ে ৫টায় অভিযুক্ত কিশোরকে ধরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তাকে জটিল করার চেষ্টা করে। প্রথমে সে পুলিশকে জানায় নীরজ তাকে গালিগালাজ করে। এ জন্য সে তাকে হত্যা করেছে। কিছুক্ষণ পর সে অন্য গল্প বলল। পুলিশ কঠোর জেরা করলে সে জানায় সে দশম শ্রেণির ছাত্র। পড়ালেখা তার মোটেও ভালো লাগে না। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাকে পড়াশোনা করতে বলেন। সেজন্য যেভাবেই হোক পড়ালেখা থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন। এ জন্য সে নীরজকে হত্যা করে। অভিযুক্তকে হেফাজতে রেখে তদন্ত করছে পুলিশ। কিন্তু এই ধরনের খুনের ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।