প্রকৃতির নিয়মানুযায়ী, শরীরেই দু’টি কিডনি থাকে প্রত্যেক মানুষের। কিন্তু কখনও শুনেছেন এক জনের দেহে, পাঁচটি কিডনি রয়েছে দুটি নয়? হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও পাঁচটি কিডনি মিলেছে চেন্নাইয়ের (Chennai) এক ব্যক্তির শরীরে।
কিন্তু পাঁচটি কিডনি একজনের দেহে? কিভাবে? তৃতীয় বার কিডনি প্রতিস্থাপন হওয়ার পরই দেখা গিয়েছে, পাঁচটি কিডনি রয়েছে ওই ব্যক্তির শরীরে। তবে প্রাণ বাঁচাতে মাদ্রাজ মেডিকেল মিশনের সদস্যরা এই অসাধ্যসাধনই করল। জানা গেছে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন এক ব্যক্তি। এদিকে শরীরে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। আবার না করলেও নয় কিডনি প্রতিস্থাপন। পাঁচটি কিডনি বসানো হল ওই ব্যক্তির দেহে সবদিক বিবেচনা করেই।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির অসুখে ভুগছিলেন, ৪১ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি। তাঁর যখন ১৪ বছর বয়স ছিল, তখনই দু’টি কিডনি খারাপ হয়ে যায় তাঁর। তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় ১৯৯৪ সালে। কিন্তু সেই কিডনিও বিকল হয়ে যায় ন’বছরের মধ্যে। ফলে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা ২০০৫ সালে ফের। সেই কিডনি নিয়েই দিব্যি সুস্থ ছিলেন ওই ব্যক্তি ১২ বছর ধরে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় ফের।তাঁর ডায়ালিসিসও এরপরই শুরু হয়। গত ৪ বছর ধরে তিনবার করে ডায়ালিসিস করতে হত ওই ব্যক্তিকেপ্রতি সপ্তাহে। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন বার বার কিডনি বিকল হচ্ছিল ওই ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপের কারণেই। এর মধ্যেই আবার ওই ব্যক্তির হৃদযন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়ায় বাইপাস সার্জারিও করতে হয়। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। চিকিৎসকদের কাছে একটা রাস্তাই খোলা ছিল। ফের কিডনি প্রতিস্থাপন।
কিন্তু সেখানেও চিকিৎসকদের একটা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় । চিকিৎসকদের কথায়, এই ট্রান্সপ্ল্যান্ট পদ্ধতিটি একটি কঠিন কাজে পরিণত হয়েছিল। এর একটি কারণ, ওই রোগীর উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। দ্বিতীয়ত, এর আগেও যেহেতু রোগীর দু’বার কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছিল, তাই শরীরের অভ্যন্তরে ফাঁকা স্থানও ছিল না। তাই ফের কিডনি প্রতিস্থাপনে প্রাথমিকভাবে সমস্যায় পড়েন ডাক্তাররা। আবার বাকি চারটি বিকল কিডনি অস্ত্রোপচার করে বার করলেও অতিরিক্ত রক্তপাতের আশঙ্কা দেখা দিত। তাই চিকিৎসকরা স্থির করেন চারটি বিকল কিডনির পাশেই পঞ্চম কিডনি প্রতিস্থাপন করবেন। শেষপর্যন্ত সেটাই করতে হয়। যদিও ওই ব্যক্তি আপাতত সুস্থই রয়েছেন বলে খবর।