আপনি যদি অফিসে চাকরি করেন বা পড়াশুনা করেন তাহলে অবশ্যই আপনি দেখে থাকবেন আপনার আশেপাশে দুই’ ধরনের মানুষ আছে। প্রথম দল আছেন, যাঁরা সকাল থেকেই ভীষণ চনমনে আর পজ়িটিভ। একেবারে এনার্জিতে ভরপুর। আর দ্বিতীয় দল দেখা যায় যাদের সব সময় ক্লান্ত লাগে? যেন ঝিমুচ্ছে। যদি ঘুম নাও পায় সব সময় যেন এনার্জির অভাব লাগে।
এই দ্বিতীয় দলের মধ্যে কি আপনিও পড়েন? আপনারও কি শরীরে এনার্জির ঘাটতির ফলে ক্লান্ত লাগে? অথবা অফিসে কাজের মাঝে ঝিমুনি ভাব আসে। বা ক্লাস চলাকালীন একেবারে মনোযোগ দিতে পারেন না ঝিমুনি ভাবের জন্য। অফিস বা কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় যেন ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়েন। শরীরে ঠিকঠাক এনার্জির অভাবে এমন ঘটনা তো হামেশাই দেখা যায়।
এনার্জি কম হওয়ার অনেক কারণ থাকলেও, আর প্রত্যেকের এনার্জি লেভেল বা শরীরের ক্ষমতাও এক না হলেও প্রত্যেকের শরীরে এনার্জি লেভেল আলাদা হওয়ার একটা বড় কারণ ব্যায়াম করা আর খাওয়াদাওয়ার নিয়ম মেনে চলা। যারা এগুলো নিয়মিত করেন তাঁদের এনার্জি লেভেল সাধারণত অন্যদের থেকে বেশি হয়। তবে সেই সঙ্গে এটাও ঠিক যে প্রতিদিন সকালবেলা বাড়ি থেকে বেরনোর আগে প্রাতরাশ হিসাবে আপনি কী খাচ্ছেন, এর উপরেও কিন্তু বহু কিছু নির্ভর করে।
একথা ঠিক, কারও খিদে পায় না ঘুম থেকে উঠেই। শরীরের সিস্টেমটা খানিকটা সময় নেয় চালু হতে। তাই যাঁরা অফিসের পথে ঘুমচোখে রওনা হন, তলানিতেই থাকবে তাঁদের এনার্জি, সুবিধে করে উঠতে পারবেন না অনেক কফি খেলেও। তাই খুব জরুরি রাতে ঠিক সময়ে ঘুমোতে যাওয়া আর সকালে হাতে সময় নিয়ে ওঠাটা। আপনি নিশ্চিতভাবেই ৭ কি ৮ ঘণ্টা ঘুমোন, তাই ওঠার খানিক পর শরীর কিছু খাবার চাইবে এটা খুব সাধারণ ব্যাপার। জেনে নিন কী কী খাওয়া সবচেয়ে ভালো সেই সময়ে ।
দিন শুরু করুন চা নয়, লেবুর জল দিয়ে: না, খালি পেটে লেবু খেলে অ্যাসিড হয় না মোটেই! বরং লেবুর টকভাব আপনার পেটের বাড়তি অ্যাসিডকে কাটিয়ে নিউট্রালাইজ় করে দেবে। অ্যালকালাইন অবস্থাটা হজমের পক্ষে সহায়ক। এর পরেই চা খাবেন না, চেষ্টা করুন একটা ফল খাওয়ার।ডিম: প্রাতরাশে প্রোটিন খেলে আপনার পেট অনেক বেশিক্ষণ ভরে থাকবে। তাই ডিম রাখুন খাদ্যতালিকায়। তবে অমলেটের চেয়ে সেদ্ধ ডিম অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। আর না, কুসুম বাদ দিয়ে কেবল ডিমের সাদাটুকু খাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই! পুরো ডিম নিশ্চিন্তে খান।ফল: এক বা একাধিক ফল খেয়েও দিন শুরু করা যায়।
ফলের ক্ষেত্রে কোনও বাছবিচার করবেন না, সব ফল নিশ্চিন্তে খান। তবে স্রেফ ফল খেলে কিছুক্ষণ পরে ফের খিদে পেতে পারে। ফল আর ছানা বা ডিম খাওয়া ভালো তার চেয়ে।দুধ বা দুধজাত প্রডাক্ট: দুধ-দই, কোনও ফল, কুমড়োর বীজ, ওটস ইত্যাদি দিয়ে স্মুদি বানিয়ে খেতে পারেন। ছানা খেতে পারেন। রুটির মধ্যে ছানা ভরে রোল করে নিতে পারেন। দুধ-মুড়ি-কলা বা কর্নফ্লেক্সও চমৎকার জলখাবার। খাওয়া যায় চিড়ে-দইও।রুটি-তরকারি: রুটি-তরকারি খাঁটি ভারতীয় জলখাবার এবং পেট ভরিয়ে রাখে বহুক্ষণ।
রুটির সঙ্গে সবজি দেওয়া ডাল খেতে পারেন তরকারির বদলে, তাতে প্রোটিন-কার্বোহাইড্রেট-ফ্যাট-রাফেজের ব্যালান্স বজায় থাকবে।
কী কী এড়িয়ে চলবেন: ব্রেকফাস্ট বলতে যা যা বোঝায় – ময়দার পাউরুটি, ফলের রস, প্যাকেজড সিরিয়াল, প্রসেসড মাংস সব কিছু এড়িয়ে চলুন। এর কোনওটাই আপনার শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে না। যা দেখতে ভালো, তা কি সব সময় কাজেও ভালো হয়?