মহাভারত এবং রামায়ণের সময় নিজের কঠিন প্রতিজ্ঞার জন্য সর্বস্ব উৎসর্গ করার ঐতিহ্যর বিষয়ে আমরা সকলেই শুনেছি। যখন মানুষ কোনো না কোনো কারণে এমন ব্রত গ্রহণ করত যা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের জন্য সমস্যা তৈরি করত। কিন্তু তারা তাদের কথায় অনড় থাকতো যে জীবন চলে গেলেও প্রতিজ্ঞা যেন ভঙ্গ না হয়। একই ভাবে সাম্প্রতিক সময়েও এক বৃদ্ধ দুই যুগেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন অদ্ভুত এক প্রতীক্ষায়, কিন্তু আজ পর্যন্ত তিনি তার ব্রত ভাঙতে দেননি।
বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা ধর্মদেব ২২ বছর ধরে নিজের শরীরে এক ফোঁটা জলও পড়তে দেননি। শরীরের দুর্গন্ধের কারণে চাকরি হারাতে হলেও তিনি প্রতিশ্রুতি থেকে পিছপা হননি। এই ব্রতের পিছনে তিনটি বড় কারণ রয়েছে, যা শেষ হওয়ার আগে তিনি তার ব্রত ভঙ্গ করবে না। ধর্মদেবের প্রতিশ্রুতি যে যতক্ষণ না দেশ থেকে নারীর প্রতি অত্যাচার, জমি সংক্রান্ত বিরোধ এবং পশু হত্যা বন্ধ না হয়, ততক্ষণ তিনি স্নান করবে না, তা যাই ঘটুক না কেন।
গ্রামবাসীরা মানসিক রোগের কথা বলতে শুরু করে:
২০০৩ সালে ধর্মদেবের স্ত্রী মারা যান। তারপরও তিনি স্নান না করার ব্রত ভঙ্গ করেননি। যার জেরে গ্রামে নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। গ্রামবাসীরা এখন এমন দৃঢ় অঙ্গীকার হওয়ার অদ্ভুত জেদকে মানসিক অসুস্থতা ও গুপ্তবিদ্যা বলে ভাবতে শুরু করেছে। কিন্তু ধর্মদেব কিছুতেই পাত্তা দেন না। সংকল্পবদ্ধ ধর্মদেব ভগবান রামের ভক্ত। আর তার মতো তিনিও মৃত্যু পর্যন্ত তার প্রতিশ্রুতি ও প্রতিশ্রুতি পূরণে বদ্ধপরিকর।
চাকরি হারিয়েছেন, স্ত্রী-পুত্রের মৃত্যুর পরও স্নান করেননি:
ধরমদেব কলকাতায় একটি পাট কারখানায় কাজ করতেন। কিন্তু স্নান না করার ব্রত পালন করে যাওয়ায় চাকরি হারান তিনি। কিন্তু তাতে তার কিছু যায় আসেনি। শরীরেও দুর্গন্ধ হয় এবং লোকেরা তাকে স্নান করতে বলে, কিন্তু সে মোটেও স্নান করতে প্রস্তুত নয়। এই সবের মাঝে, ৬২ বছর বয়সী এই ব্যাক্তি যিনি কয়েক দশক ধরে স্নান করেননি তিনি কখনও অসুস্থও হন না। জানিয়ে রাখি, ইরানের আমো হাজিও গত ৬৭ বছর ধরে স্নান করেননি। এই ব্যক্তি ইরানের বাসিন্দা, যার বয়স ৮৭ বছর। এত বছরে শরীরে জলও ঢালেনি। এজন্য তাকে বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা ব্যক্তিও বলা হয়।